কয়রায় ছয় বছরেও শেষ হয়নি সড়কের কার্পেটিং, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় দুই কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিংয়ের কাজে চরম ধীরগতি ও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কাজ শুরুর পর থেকে ছয় বছর অতিবাহিত হলেও সম্পন্ন হয়নি। ফলে সাধারণ জনগণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে সড়কের পাশে অবস্থিত মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের ও কমিউনিটি ক্লিনিকে নারী ও বয়স্কদের যাতায়াতে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। আধা কিলোমিটারের মত কার্পেটিং করা রয়েছে। বাকি অংশে খোয়া বিছিয়ে সমান করে দেওয়া। তবে, কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। কিছু জায়গায় উচুঁনিচু হয়ে ঢেউ উঠেছে। ডাব্লিউবিএমের খোয়ার উপরে মাটির আবারণ পড়েছে।
দেয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা আকবর হোসেন, রাজিয়া, মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন বলেন, রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় ধুলায় কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া সামান্যা বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়। দীর্ঘ সাত বছর ভোগান্তি পোহাচ্ছি। যতটুকু কার্পেটিং করা হয়েছে সেটাও নিম্নমানের।
আরেক বাসিন্দা হযরত আলী গাইন বলেন, আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। পাঁচটি বছর চরম কষ্ট ভোগ করেছি, এখনও ভোগান্তি কাটেনি। মাঝে মধ্যে ঠিকাদারের লোক এসে নামমাত্র কাজ করে চলে যায়।
কয়রা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানায়, কয়রার আরএনডিএস দেয়াড়া (হারুণ গাজীর মোড়) থেকে রোনবাগ ইউজেডআর পর্যন্ত এক হাজার ২৭০ মিটার ও আমাদী ইউনিয়নের খিরোল বিসি থেকে বেজপাড়া বিসি রোড পর্যন্ত ৮৮৩ মিটার সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ২৮ লাখ ৮৯ হাজার ৬২৭ টাকা। কাজটির টেন্ডার পায় মেসার্স এ সামাদ ট্রেডার্স। ২০২১ সালের ২৩ মে নির্মাণ কাজ সম্পন্নের কথা থাকলেও অদ্যাবধি ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
কাজের ঠিকাদার অহিদুজ্জামান বাবু বলেন, টাকার সমস্যাটয় যথাসময়ে কাজটি করতে পারিনি। এছাড়া নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধিতে কাজটিতে আমার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তবুও কাজটি দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি। কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে।
কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা বলেন, ঠিকাদারকে বার বার কাজের জন্যহ তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তিনি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কাজে গড়িমাসি করেছে। এ পর্যন্ত ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে আশা করছি।
ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যেবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে একাধিকবার শোকজ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিধি অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ সময়ের বিল কাটা হবে।