বিতর্কিত মন্তব্যের পর বহিষ্কার হলেন ড্যাফোডিলের সেই শিক্ষিকা

‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিতর্কিত মন্তব্যের পর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষিকা তাহমিনা রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র এবং এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
অধ্যাপক সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজু বলেন, শিক্ষিকা তাহমিনা রহমানকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনে তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে।
এর আগে, ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া বিতর্কের পর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষিকা তাহমিনা রহমান একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করে সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। সোমবার মধ্যরাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, সাম্প্রতিক ঘটনাটি নিয়ে কিছু বলতে চাই, যা ৭ এপ্রিল, ২০২৫-এ গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজাকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। প্রথমেই বলতে চাই, আমার কথার ভুল বোঝাবোঝির কারণে যে গভীর কষ্ট ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তার জন্য আমি গভীরভাবে দুঃখিত। আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন। আমি কখনোই ফিলিস্তিন ও গাজার মজলুম মুসলিমের ওপর নিকৃষ্ট ইসরায়েলের ঘৃণিত হত্যাযজ্ঞ সমর্থন করিনি। এখনও করিনা, কখনোই করব না।
তাহমিনা রহমান আরও লিখেন, যে স্ক্রিনশটগুলো অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে, তা আমার প্রকৃত মনোভাবকে প্রতিফলিত করে না। এখানে একটি ভুল বোঝাবোঝি হয়েছে এবং আমার কথাগুলো ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। আমি নিঃসন্দেহে গাজা ও তার জনগণের পাশে আছি। তাদের ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার দাবিকে কঠোরভাবে ও গভীরভাবে সমর্থন করি। ফিলিস্তিনের মুসলমানদের হত্যার জন্য আমি ইসরাইলের করুণ ধ্বংস চাই, মনে প্রাণে চাই, আল্লাহর কাছে চাই।
ওই শিক্ষিকা লেখেন, যেহেতু আমার ছাত্রছাত্রীদের সাথে কথোপকথনটি ছিল কিছুটা বিকেলের দিকের, আমি সারাদিন সামাজিক মাধ্যমে অ্যাক্টিভ না থাকায় বুঝতে পারিনি এটি পুরো বিশ্বের শিক্ষার্থীদের একটি কালেক্টিভ প্রটেস্ট। আমি নিতান্তই আমার নিজ ব্যাচের, সেকশনের কিছু শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত ভেবেছিলাম। তাই আমার প্রতিক্রিয়া এরূপ ছিল। তবে সেটা হলেও আমার এইরূপ প্রতিক্রিয়া দেখানো ঠিক হয় নি। এই কারণে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
পোস্টের শেষে তাহমিনা রহমান লেখেন, আমার শিক্ষার্থী, সহকর্মী, বন্ধু ও এই ঘটনার দ্বারা যারা কষ্ট পেয়েছেন তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনারা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।
এর আগে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিভাগের এই শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের একটি গ্রুপ মেসেজে জানান, যারা ক্লাস বর্জন করবে তাদের ক্লাসে অনুপস্থিতি দ্বিগুণ ধরা হবে। এই ঘোষণার স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।