পদ শূন্য হওয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) ইতিহাস বিভাগে পদ শূন্য হওয়ার আগেই তিনজনকে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্যানেল তৈরি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। শুধু বাছাই বোর্ডের সুপারিশ নয়, সিন্ডিকেট সভায় এই সুপারিশ অনুমোদিত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহলে ও প্রশাসনে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপক পদের বিপরীতে একজন প্রভাষক নিয়োগ সম্পন্ন হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বাছাই বোর্ড সুপারিশ করে এবং সিন্ডিকেটের অনুমোদনে তার নিয়োগ হয়।
তবে একই বাছাই বোর্ড কর্তৃক আরও তিন জন প্রার্থীকে প্যানেল হিসেবে সুপারিশ করা হয়। সুপারিশে বলা হয়, আগামী এক বছরের মধ্যে ইতিহাস বিভাগের কোনো শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে গেলে/পদ শূন্য হলে বা ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে নতুন পদ ছাড়করণ হলে সেই পদের বিপরীতে ক্রমানুযায়ী এই প্যানেল থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
গত ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৯তম সিন্ডিকেটে এই সুপারিশ অনুমোদন করা হয়।
সিন্ডিকেটের বিবরণী অনুযায়ী, ২৮ আগস্ট থেকে আগামী ১ বছরের মধ্যে ইতিহাস বিভাগের কোন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে গেলে/পদ শূন্য বা পদ ছাড়করণ হলে ৩ জনের প্যানেল থেকে ক্রমানুযায়ী উক্ত পদের বিপরীতে নিয়োগ দেয়ার সর্বসম্মত সুপারিশ অনুমোদন করা হলো। তারা হলেন- মো. তারেকুল ইসলাম, সাজিয়া সুলতানা, তাসনুভা রাগদা।
এ বিষয়ে বাছাই বোর্ডের সদস্য ও ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ শামসুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিদ্ধান্তটি সিন্ডিকেটে অনুমোদনের বিষয়ে বিভাগকে কোন চিঠি দেওয়া হয়নি। বাছাই বোর্ডের সুপারিশ কনফিডেন্সিয়াল বিষয়। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হুদা বলেন, আসলে এরকম হওয়ার কথা নয়। কারণ বিষয়টি আইনসম্মতই না। বাছই বোর্ডের সুপারিশে যদি এরকম কিছু লেখা হয়ে থাকে তাহলে তা ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, বাছাই বোর্ড যে পদের জন্য তৈরি করা হয়েছে সে পদের জন্য প্যানেল আকারে সুপারিশ করার নিয়ম রয়েছে। তবে নতুন পদ এলে বা অন্য কোন পদ শূন্য হলে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেই নিয়োগ দিতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, শুধু বাংলাদেশ কেন সারা পৃথিবীতে এমন নজির রয়েছে কিনা আমার জানা নেই, যে পদ আসেইনি সেই পদে ব্যক্তি চূড়ান্ত করে রাখা হয়েছে। আমার মনে হয় বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সিন্ডিকেটও কিভাবে বিষয়টি অনুমোদন করল তা বুঝতে পারছি না।

রোহান চিশতী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়