‘২০১৫ গণতান্ত্রিক শূন্যতার বছর’
অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, সংস্কৃতিই শুধু নয়, বলা হয়ে থাকে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতি। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে কেমন ছিল সবকিছুর নিয়ন্ত্রক এই রাজনীতির অবস্থা বা রাজনীতিবিদদের হাত ধরে কোন পথে হেঁটেছে বাংলাদেশ আর গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাই বা কতদূর, তা জানতে ফিরে তাকাতে হবে বছরের শুরুর দিকে।
ঘুরে তাকালে দেখা যাবে, হরতাল-অবরোধ, সংঘর্ষ-সহিংসতা দিয়ে শুরু হয় ২০১৫ সাল। ৩ জানুয়ারি থেকেই গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর পর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনটিকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থানে চলে যায় ২০-দলীয় জোট ও সরকার।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও দেশের কূটনীতিক দূতরাও সে সময় বরফ গলাতে পারেননি সংকটের। এভাবেই প্রতিযোগিতার রাজনীতি রূপ নেয় প্রতিহিংসায়। রাজনৈতিক আগুনের বলি হন শতাধিক নিরীহ মানুষ। রাজনীতির বলি হয় দেশের অর্থনীতিও।
অবশেষে রাজনৈতিক অচলাবস্থার ইতি টেনেছিল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে কার্যালয় থেকে তিন মাস পর বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। কিন্তু নির্বাচনের দিন ২০-দলীয় জোটের ভোট বর্জনে আবারো পুরোনো দ্বন্দ্বে ফিরে যায় রাজনীতি। তবে আর রাজপথে নয়, বছরজুড়ে চার দেয়ালেই আটকে থাকে বিএনপি ও তাদের জোটের রাজনীতি।
সে সঙ্গে বছরের শুরুতে আন্দোলন চলার সময় কর্মসূচি ঘোষণাকারী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদের নিখোঁজ হওয়া এবং বছরের মাঝামাঝি সময় তাঁকে খুঁজে পাওয়ার ঘটনাও বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
এর মধ্যেই সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের দুই মাস লন্ডন সফর, ঢাকা ও রংপুরে দুই বিদেশি হত্যাসহ নানা ইস্যুতে বাকযুদ্ধে ফের উত্তপ্ত হয় রাজনৈতিক অঙ্গন।
এরই মধ্যে বছরের শেষে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচনের প্রস্তুতিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আঞ্চলিক রাজনীতিও।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সব মিলিয়ে ২০১৫ সাল গণতান্ত্রিক শূন্যতার একটি বছর। আর ২০১৫ সালের মূল্যায়নে আগামী দিনের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জের ক্ষেত্র তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য তাঁদের।
বিদায়ী বছরে আলোচিত রাজনৈতিক ঘটনাবলির পর্যবেক্ষণ নিয়ে আরো দেখুন মাকসুদুল হাসানের বিশেষ ভিডিও প্রতিবেদনে :