সাময়িক বরখাস্তের বিধান কেন অসাংবিধানিক নয়, তা জানতে চেয়ে রুল
ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীর গ্রেপ্তার হাজতবাসের কারণে সাময়িক বরখাস্তের বিধান কেন অসাংবিধানিক নয়, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মো. মাজেদুল কাদের। এর আগে ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার চর চাঁদপুর নব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ আজিজ খান রিট আবেদন দাখিল করেন।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, ২০১০ সালের সদরপুর থানার একটি ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় তিন মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হন শিক্ষক এম এ আজিজ খান। ওই মামলায় হাজতবাসের কারণে ২০১৩ সালে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী তিনি খোরপোষ ভাতা পেয়ে আসছিলেন। বাংলাদেশ সরকারি চাকরি বিধি ১৯৭৩ এর পার্ট ১, বিধি ৭৩ এর নোট ১ অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে ওই মামলা চলমান থাকায় তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ চলমান রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সরকারি চাকরি বিধি ১৯৭৩, পার্ট ১, বিধি ৭৩ এর নোট ২, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং আবেদনকারীর মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি দাবি করে রিট আবেদনটি দাখিল করা হয়। একইসঙ্গে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না মর্মে রিট আবেদনে প্রার্থনা করা হয়।
আদালতে শুনানির সময় আইনজীবী বলেন, কোনো উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপরাধী প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যক্তিকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা আইনের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সংবিধানের ৪০ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত চাকরির অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়াও বিভাগীয় কোনো কার্যধারা গ্রহণ ছাড়া অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত আবেদনকারীকে সাময়িক বরখাস্তের অধীন রাখা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১ ও ৩২ এর পরিপন্থী। একইসঙ্গে এই বিধানটি নিপীড়নমূলক ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
এসব বিষয় বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকারি চাকরিবিধি ১৯৭৩, পার্ট ১, বিধি ৭৩ এর নোট ২, কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না এবং আবেদনকারীর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।