বানের জলে ভেসে গেছে হাওরবাসীর ঈদের আনন্দ
বানের জলে ভেসে গেছে সুনামগঞ্জের হাওরবাসীর এ বছরের ঈদ-আনন্দ। ঈদে পরিবার-পরিজনের জন্য নতুন পোশাক তো দূরের কথা, ঠিকমতো খাবারের যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাওরের কৃষকদের। কোনো সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগও করছেন তাঁরা। একই চিত্র নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে।
এর মধ্যে সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওরে কদিন আগেও ছিল সবুজের সমারহ। এখন সেখানে থৈ থৈ পানি। বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে হাজারও কৃষকের স্বপ্ন। তাই, এ বছর সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ঈদের কোনো আনন্দ নেই, আছে হতাশা আর ক্ষোভ। ঈদে ছেলেমেয়েদের নতুন পোশাক কিনে দিতে পারছেন তাঁরা। এসব কথা ভেবে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনেকে।
ক্ষতিগ্রস্ত এক হাওরবাসী বলছেন, ‘কাল ঈদ। বাচ্চাদের সঙ্গে ঈদ করব কীভাবে? যদি ধান থাকত, তাহলে ওই ধান বেঁচে আমরা ঈদ করতে পারতাম। আমরা কীভাবে চলব, তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।’
হাওরনেতাদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পিআইসির অবহেলা ও দুর্নীতির কারণে বাঁধ ভেঙে কৃষকের এ দুর্দশা। তাই, এ দুর্যোগে হাওরবাসীর পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও আহ্বান তাঁদের।
জেলা সিপিবির সভাপতি ও হাওর আন্দোলনের নেতা অ্যাডভোকেট এনাম আহমদ বলেন, ‘গুটিকয়েক মানুষের অবহেলা ও দুর্নীতির জন্য এবারও সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি হাওরের সব ফসল তলিয়ে গেছে।’
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আশা করব—সরকার বাহাদুর এ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াবে, যাতে তাঁরা ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। নাহলে কৃষকদের আনন্দ চোখের জলে ভেসে যাবে।’
গত ২ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত সুনামগঞ্জের ১০ উপজেলার অন্তত ২৩টি বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর বোরো ফসল।
একই চিত্র নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে। ঈদের আনন্দ মলিন হয়ে গেছে শতভাগ হাওর অধুষ্যিত খালিয়াজুরী উপজেলার ১৫টি গ্রামের হাজারও পরিবারের। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিচু এলাকার বিস্তীর্ণ বোরো ফসল তলিয়ে যায়। ঈদের আনন্দ নয়, বরং তাঁদের চিন্তা, পুরো বছরটা তাঁরা কীভাবে চলবেন।
পুনরায় ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি সহায়তা চেয়েছেন হাওরবাসী।