পাল্টা আঘাতে প্রতিরোধ করব, কাউকে ছাড় নয় : গয়েশ্বর
অনির্বাচিত সরকারকে ছাড় দেওয়ার সময় নাই এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জীবন রক্ষার অধিকার আমাদের আছে। আমরা যা করি তার সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে করে থাকি। মিটিং-মিছিল হরতাল করার মৌলিক অধিকার আমাদের আছে। আর কোনো প্রতিবাদ নয়, হামলা হলে প্রতিরোধ নয়, হামলার বদলে হামলা, আঘাতের পর আঘাত করা হবে। পোশাকে কিংবা সিভিলে জানাই, আমাদের উপর হামলা করবে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা পাল্টা আঘাত করে প্রতিরোধ করব। কাউকে ছাড় দেওয়ার সময় নাই।’
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর বিএনপির (উত্তর দক্ষিণ) উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে বিক্ষোভ সমাবেশে গয়েশ্বর এসব কথা বলেন।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘যারা রাজপথের আন্দোলনে আছেন, তারা স্লোগান বক্তব্য এবং টেলিভিশনে ছবি তোলা বন্ধ করেন। সরকার পতনে তাদের সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবকিছু মোকাবেলা করতে হবে। এখন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়।'
বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ’এ হামলা পরিকল্পিত। আমরা শুধু মার খাব সেই দিন শেষ। জনগণ তাদের বাংলাদেশের অপেক্ষায়। এই সরকার ও সংসদ রেখে কোনো নির্বাচন এদেশে হবে না। আমরা যদি নির্বাচনে না যাই, তাহলে কার সঙ্গে খেলবেন?'
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, শ্রীলঙ্কা সরকারের অবস্থা দেখেও যদি বর্তমান অনির্বাচিত সরকার শিক্ষা না নেয়, তাহলে বুঝতে হবে তাদের পরিণতিও ভয়াবহ হতে পারে। আমরা তাদের পরিণতি এরকম হোক, তা চাই না। আমরা চাই তারা ভালোভাবে প্রস্থান করুক। পদত্যাগ করুন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী তাদের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বলেছেন রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না। ঠিক তার পরের দিনই বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসভবনে হামলা চালানো হয়। তার মানে হচ্ছে সবাইকে বুঝতে হবে শেখ হাসিনা যা বলেন, করেন তার উল্টো। তিনি যা করেন তা কখনোই বলেন না; যা বলেন তা করেন না।
তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের মতো এদেশের অনির্বাচিত তথাকথিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের লোকেরাও মুদ্রাপাচারে ব্যস্ত।’
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেখতে পেলাম দেশি-বিদেশি নয়, প্রতিবেশি ও এদেশের অনির্বাচিত সরকার আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, আসন বণ্টনের ফেরি করে বেড়াচ্ছে! তাদেরকে প্রশ্ন রাখতে চাই, আসন বণ্টন করার অধিকার আপনাদেরকে কে দিয়েছে? গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যখন সরকার গঠিত হবে, তখন সবকিছু বিচার করা হবে। এখন লড়াই করব, মরবো, সরকার পতন নিশ্চিত করবো, বিজয় অতি নিকটে।’
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘যারা এ সরকারের নির্বাচনী ফাঁদে পা দিবে, তাদেরকে ঘেরাও করতে হবে। সব সময় নজরে রাখতে হবে, কেউ এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে চলার সময় পাবেন কিনা, সেটা তাকে বিবেচনা করতে দিতে হবে।'
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হকের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।