বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হবে না : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/05/14/zahid-faruk.jpg)
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, যারা বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সাথে তুলনা করছে, তারা মনগড়া কথা বলছে। বাংলাদেশ কখনোই শ্রীলঙ্কা হতে পারে না। বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা এক নয়। শ্রীলঙ্কার বর্তমান ফরেন রিজার্ভ হলো দুই বিলিয়ন ডলার, আর বাংলাদেশের ৪২ বিলিয়ন ডলার। কোথায় দুই আর কোথায় ৪২। শ্রীলঙ্কা সমুদ্রের তীরের একটি দেশ, তাদের অধিকাংশ আয় পর্যটন থেকে। করোনাকালে সবকিছু মুখ থুবরে পড়ার পর তারা প্রচুর লোন পরিশোধ করতে পারছেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কাকেও লোন দিয়েছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এই পর্যায় চলে গেছি।
আজ শনিবার বরিশাল নগরীর বান্দরোডস্থ শিল্পকলা একাডেমির অডিটরিয়ামে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কমিউনিটি পুলিশিং সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে মাত্র দুই বিলিয়ন ডলার ছিল যার জন্য তাদের অর্থনীতি মুখ থুবরে পড়েছে, তবে আমাদের বিশ্বাস তারাও ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু যে নিন্দুকেরা মিথ্যে কথা বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, তারা ভুল ধারণা দিচ্ছে। শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করতে পারে না, আমাদের গার্মেন্টস, আইটি, মানবসম্পদ থেকে আয় করছি। আর আমাদের দেশে হওয়া মেগাপ্রকল্পগুলো প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করবে।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, আঠারোশত শতাব্দিতে কমিউনিটি পুলিশিং শুরু হয়েছিল ইংল্যান্ডে। পরবর্তীকালে বিভিন্ন দেশও এটা শুরু করেছিল এবং বাংলাদেশে ২০১৭ সাল থেকে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপন করে আসছে। যারা সন্ত্রাস দমনসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত থাকেন তাদের সাথে সাধারণ মানুষের মাঝে একটা বন্ধন সৃষ্টি করেছে কমিউনিটি পুলিশিং। পুলিশের সদস্যদের যে কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে, সেই কাজটি সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন করতে হলে কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যদের সহযোগিতা অবশ্যই প্রয়োজন। একটি কমিউনিটির লোকজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে একত্রিত হয়ে ওই এলাকার সন্ত্রাস দমন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারে। প্রত্যেক কাজের পিছনে একটা দর্শন কাজ করে। এদিক থেকে হিসাব করলে দর্শন ছাড়া কোন কাজের সফলতা অর্জন করা যায় না। আধুনিক পুলিশি ব্যবস্থার কমিউনিটি পুলিশ ও একটি দর্শন। পুলিশই জনতা জনতাই পুলিশ এই দর্শনকে সামনে রেখে কমিউনিটি পুলিশ কাজ করে চলেছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান। প্রধান আলোচক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহানগর আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক মানিক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের কোনো বিভাগ বা জেলায় কমিউনিটি পুলিশিং কতটা ভালো করছে তার কম্পিটিশন থাকা উচিত তাহলে এটার মান আরও উন্নয়ন হবে। কমিউনিটি পুলিশিংয়ে সদস্যদের এমনভাবে নেওয়া উচিত যেখানে কোন রাজনীতি, স্বার্থ কাজ করা উচিত না। যারা পরিষ্কার চিন্তার মানুষ, যাদের এলাকার একটা ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত, এলাকার মানুষ পছন্দ তাদের এখানে আনা উচিত। তাহলে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থায় বরিশালে আমরা যে পর্যায়ে গিয়েছি, তার থেকে আরও ভালো করতে পারবো। এতে পুলিশের কাজের মাত্রাও কমে আসবে। বরিশালে আমরা সন্ত্রাস, মাদক থেকে দূরে থাকতে পারব। কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে সমাজের মানুষকে নিরাপত্তা, আইনি সহায়তা ও সেবা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বিশেষ অবদান রাখা যাবে বলে আমরা মনে করি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধশালী দেশে নিতে হলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছেন, যা বাস্তবায়নে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আপনাদের দায়িত্ব অপরিসীম। আপনাদের এলাকার আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে আরও সুন্দরভাবে কাজ করুন। যাতে করে এলাকাবাসী শান্তিতে বসবাস করে, এলাকার উন্নয়ন হয়। নারীদের ওপর নিপীড়ন বন্ধে, শিশুবান্ধব পরিবেশ গড়তে, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গড়তে কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যদের ভূমিকা রাখতে হবে। আর আপনারা যদি আপনাদের ভূমিকা সঠিকভাবে রাখতে পারেন তাহলে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে আমাদের ২০৪১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না।