হতাশার ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বড় হার
ব্যাটিং ব্যর্থতায় পরাজয়ের খুব কাছাকাছিই ছিল বাংলাদেশ। জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল স্রেফ চার উইকেট। কিন্তু সোমবার টেস্টের চতুর্থ দিন ভেজা আউটফিল্ড অপেক্ষা বাড়াচ্ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। দিনের দুই সেশন পর অবশেষে খেলা মাঠে গড়ালে মাত্র এক ঘণ্টা সময় নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর মধ্যেই বাংলাদেশের বাকি চার উইকেট তুলে নিয়ে বড় জয় তুলে নেয় ক্যারিবীয়রা।
সেন্ট লুসিয়ায় সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এর আগে অ্যান্টিগা টেস্টেও হেরেছিল সফরকারীরা। দুই টেস্টেই ক্যারিবীদের কাছে ২-০ ব্যবধানে হোওয়াইটওয়াশ হয় সাকিব আল হাসানের দল।
ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে টেস্টের তৃতীয় দিনই ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে যায় বাংলাদেশ। কারণ তৃতীয় দিনই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। কাল ছয় উইকেটে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ১৩২ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড থেকে ৪২রানে পিছিয়ে থেকে আজ টেস্টের চতুর্থ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। নুরুল হাসানের ব্যাটে চড়ে এই রান কোনো মতে টপকে ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ায় সফরকারীরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিড টপকে যাওয়ার পর ১৮৬ রানেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ১৩ রানের। এই রান তাড়া করতে নেমে ২.৫ ওভারেই জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে ভূমিকা রাখা নুরুল ৬০ রান করেছেন। বাকিরা সবাই উইকেটে আসা-যাওয়ার মিছিলে ছিলেন।
এর আগে গতকাল বৃষ্টি বিঘ্নিত দিনের দ্বিতীয় সেশনে প্রথম ইনিংসে ৪০৮ রানে থেমেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ করা কাইল মায়ার্স খেলেছেন ২০৮ বলে ১৪৬ রানের ইনিংস। ১৭৬ রানের লিড পায় ব্র্যাথওয়েটের দল।
এই ১৭৬ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। বরাবরের মতো ব্যর্থ হয় বাংলাদেশের টপ অর্ডার। দলীয় ৩২ রানের মধ্যেই একে একে বিদায় নেন তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয় ও এনামুল হক বিজয়।
২২ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে বিদায় করেন কেমার রোচ। ক্যারিবীয় বোলারের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল মোকাবিলা করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন তামিম (৪)। এরপর স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জয় (১৩)। উইকেটে এসে থিতু হতে পারলেন না বিজয়ও। সেই রোচের বলে তিনিও কাটা পড়েন। বিজয়কে এলবির ফাঁদে ফেলেন রোচ।
দলের বিপদে হাল ধরতে পারেননি লিটন দাসও। আশা জাগিয়ে এলবির ফাঁদে পড়ে তিনিও বিদায় নেন। ১৯ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এরপর কিছুক্ষণ চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন নাজমুল শান্ত ও সাকিব আল হাসানের জুটি। ৪৭ রানের এই জুটি ভাঙেন রোচ। ৪২ রান করে ফেরেন শান্ত। এরপর বিদায় নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। ছয় উইকেট হারানোর পর দিনের বাকি অংশ নুরুলকে নিয়ে কাটিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে গত শুক্রবার টেস্টের প্রথম দিন আগে ব্যাট করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রানে থামে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২৩৪
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ৪০৮
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৪৫ ওভারে ১৮৬ (তামিম ৪, জয় ১৩, বিজয় ৪, শান্ত ৪২, লিটন ১৯, সাকিব ১৬, নুরুল ৬০, মিরাজ ৪, শরিফুল ০, খালেদ ০, ইবাদত ০; রোচ ১৩-১-৫৪-৩, আলজারি ১৪-২-৫৭-৩, ফিলিপ ৫-১-২৩-০, মায়ার্স ৫-১-২১-০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস : ২.৫ ওভারে ১৩/০ (ব্র্যাথওয়েট ৪, ক্যাম্ববেল ৯; ইবাদত ১.৫-০-৯-০, খালেদ ১-০-৪-০)।
ফল : ১০ উইকেটে জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সিরিজ : ২-০ ব্যবধানে জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ।