লক্ষ্মীপুরে ভাই-বোনের লাশ মিলল ডোবায়, পরিবারের অভিযোগ হত্যাকাণ্ড
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/07/17/lakshmipur-photo.jpg)
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় বাড়ির পাশের ডোবা থেকে সামিয়া আক্তার (১০) ও তাজমুল হোসেন (৭) নামের দুই ভাই-বোনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলার চররমনী ইউনিয়নে মেঘনা নদীর জেগে ওঠা মেঘার নব্যার চরে গতকাল শনিবার এ ঘটনা ঘটে।
পরে গতকাল দিবাগত রাতে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুলেছে পরিবার।
এর আগে গতকাল বিকেলে নৌকায় করে তিন সন্তানকে নিয়ে বাড়ির পাশের একটি দোকানে সদাই করতে যান তাঁদের বাবা সুজন ঢালী। হঠাৎ নদীতে জোয়ার এলে বড় সন্তানকে নিজের সঙ্গে রেখে সামিয়া ও তাজমুলকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য নৌকায় উঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ ছিল। ঘটনাটি রহস্য তৈরি করেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষক সুজন ঢালী পরিবার নিয়ে নব্যার চরে বসবাস করেন৷ সম্প্রতি প্রতিবেশী আক্কাছ ব্যাপারী ও বিলকিছদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ হয়। জমি নিয়ে একটি মামলাও চলমান। এর জের ধরে সুজনকে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছিলেন তাঁরা। সেসব হুমকিতে পরিবার নিয়ে সুজনের আতঙ্কে দিন কাটতো বলে জানা গেছে।
এর মধ্যে গতকাল শনিবার বিকেলে তিন সন্তানকে নিয়ে নৌকায় করে বাড়ির পাশের একটি দোকানে সদাই করতে যান সুজন। এরপর বড় সন্তানকে নিজের সঙ্গে রেখে সামিয়া ও তাজমুলকে নৌকায় উঠিয়ে বাড়ির উদ্দেশে ছেড়ে দেন। ওই সময় নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ডুবে যায় আশপাশের বিস্তীর্ণ চর এলাকা। কিছুক্ষণ পর খোঁজ করতে গিয়ে একপর্যায়ে বাড়ির পাশের একটি ডোবায় তাঁদের মরদেহ পাওয়া যায়। এতে স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোক নেমে আসে।
এদিকে, নিহত দুই ভাই-বোনের শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরণের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। ঘটনাটি রহস্যের সৃষ্টি করেছে।
নিহত দুই ভাই-বোনের বাবা সুজন ঢালী গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করে জানান, পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর সন্তানদের হত্যা করেছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, বক্তব্য জানতে আক্কাছ ব্যাপারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) পলাশ কান্তি নাথ জানান, মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড কি না, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।