সাক্ষাৎকার
ভালো খেললে নিশ্চয়ই নির্বাচকরা বিবেচনা করবেন : নাঈম
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/04/20/naim-1.jpg)
জাতীয় দলে মোহাম্মদ নাঈম শেখের যাত্রাটা বেশিদিনের নয়। একটি টেস্ট, দুটি ওয়ানডে ও ৩৫টি টি-টোয়েন্টি খেলা নাঈম সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০২১ সালের মে তে। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলেন গত বছর আগস্টে। জাতীয় দলের বাইরে থাকলেও নাঈমের ব্যাটে বসন্ত চলছে। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার ওপরে তিনি। চলতি বছর অনুষ্ঠিত হবে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। ক্রিকেট বোর্ড বলেছে, পারফর্মারদের সঠিক মূল্যায়ণ করা হবে। মোক্ষম সময়ে ছন্দে আছেন তিনি। নিজের ফর্ম, দলে ফেরার সম্ভাবনার পাশাপাশি ফরিদপুরের বাঁহাতি ওপেনার নাঈম শেখ কথা বলেছেন ঈদ আনন্দের একাল-সেকাল নিয়েও।
প্রিমিয়ার লিগে দারুণ ছন্দে আছেন। আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ১১ ম্যাচে ৭১৯ রান নিয়ে আছেন শীর্ষে। এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের রহস্য কী?
নাঈম : কোনো রহস্য নেই ভাই (হাসি)। পরিকল্পনামাফিক খেলার চেষ্টা করেছি। বিপিএল থেকে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছিলাম। চেয়েছি যত বেশি সম্ভব ভালো খেলতে।
একটি সেঞ্চুরি, সাতটি হাফসেঞ্চুরি। সাত হাফসেঞ্চুরির কয়েকটিকে চাইলে শতকে রূপ দিতে পারতেন। সেটা হয়নি। কোনো নার্ভাসনেস কাজ করছিল?
নাঈম : ওভাবে কোনো খারাপ লাগা কাজ করেনি। দলের প্রয়োজন অনুযায়ী খেলেছি আমি। পরিস্থিতি আমার কাছে যেমন ব্যাটিং দাবি করেছে, সেভাবে করেছি। সত্যি বললে, দুই তিনটি ম্যাচে আমি ইনিংসগুলোকে বড় করতে পারতাম। সেই ম্যাচগুলোতে ভালো বলে আউট হয়েছি।
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2023/04/20/naim-2.jpg)
সুপার লিগে আরও পাঁচ ম্যাচে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। হাজার রান ছুঁতে প্রয়োজন ২৮১। এনামুল হক বিজয়ের গত আসরে করা ১,১৩৮ রানের রেকর্ড টপকাতে প্রয়োজন ৪১৯। সম্ভব বলে মনে করেন?
নাঈম : নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যের দিকে ছুটছি না ওভাবে। আমি যখন টুর্নামেন্ট শুরু করি, একদম শূন্য থেকে শুরু করি। লক্ষ্য ছিল যতটা পারি ভালো খেলব। এখনও সেটিই লক্ষ্য। মাথার মধ্যে যদি টার্গেটের পেছনে দৌঁড়ানোর ভাবনা চলে আসে, তাহলে নিজের খেলাটা নষ্ট হবে। তাই ৯০০ বা হাজার রান করতেই হবে, এমন কিছু ভাবছি না। আমাকে খেলতে হবে দলের চাওয়া অনুযায়ী। কখনও জিততে হলে ১২০ রানের প্রয়োজন হবে, কখনও ৩৫০। ওই মুহূর্তে আমার যতটুকু করা প্রয়োজন সেটুকু করব।
বাংলাদেশের ক্রিকেট বেশ ভালো সময় পার করছে। একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বোর্ড জানিয়েছে যারা পারফর্ম করবে, তারা সুযোগ পাবে। এটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করছেন?
নাঈম : এটা অবশ্যই ভালো। এখন খেলোয়াড়রাও জানে, যে ভালো করবে সে-ই জাতীয় দলে জায়গা পাবে। আপনি যখন ভালো করবেন, তখন সুযোগ ধরা দেবে। আমাদের দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। আমি মনে করি এখানে যারা অংশ নিচ্ছে তাদের জন্য এটি বড় সুযোগ। ভালো খেলার কোনো বিকল্প নেই। কারণ, এখানের পারফর্মারদের সবসময়ই মূল্যায়ন করা হয়। আমি নিজেও জাতীয় দলে প্রথমবার ডাক পেয়েছিলাম ডিপিএলে ভালো খেলেই।
সামনেই বিশ্বকাপ আসছে। নিশ্চয়ই আপনারও পরিকল্পনা আছে বিশ্বকাপ নিয়ে? নিজের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন?
নাঈম : সত্যি বলতে লম্বা চিন্তা করছি না। আপাতত আমার মনোযোগ প্রিমিয়ার লিগটা ভালোভাবে শেষ করার দিকে। আমি যদি নিজের জায়গা থেকে সেরাটা দিতে পারি, নির্বাচকরা নিশ্চয়ই বিবেচনা করবেন।
একজন ওপেনার হিসেবে জাতীয় দল কিংবা ক্লাব যেখানেই খেলেন, কতটা চাপ অনুভব করেন, কতটা উপভোগ করেন?
নাঈম : কোনো চাপ অনুভূত হয় না। তবে শুরু থেকেই ব্যাটিংটা উপভোগ করি খুব। ছোটবেলা থেকেই আমি ওপেনিং করে অভ্যস্ত। তাই কোনো চাপ অনুভব করি না। বরং নতুন বলে ইনিংস শুরু করতে সবসময়ই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।
ছোট ক্যারিয়ারে যথেষ্ট উত্থান-পতন দেখেছেন। এই সময়টায় নিজেকে মানসিকভাবে কীভাবে ঠিক রাখেন?
নাঈম : সব খেলোয়াড়ই কিন্তু ভালো-খারাপ সময় পার করে। আমার যখন খারাপ সময় আসে, তখন আমি বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করি। মানসিকভাবে ঠিক থাকা, পরিকল্পনা ও রুটিন করা। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এই প্রক্রিয়াটা ঠিকঠাক অনুসরণ করা। এতে হয় কী, খারাপ সময়টা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এছাড়া আমি জাতীয় দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের কাছ থেকে পরামর্শ নেই। যা আমার ক্ষেত্রে বেশ কাজে দেয়।
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2023/04/20/in-2.jpg)
ক্রিকেটে আপনার আদর্শ কে?
নাঈম : আমি যখন থেকে খেলা বুঝতে শিখি তখন থেকে কুমার সাঙ্গাকারাকে ভালো লাগে। আর দেশের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান। সাঙ্গাকারা ও সাকিব ভাই দুজনই আমার আদর্শ।
ঈদের দিনটি কেমন কাটে? সালামি পান এখন আর?
নাঈম : (হাসি)। ঈদের দিনটা এখন আর আগের মতো নেই। আগে ঈদের নামাজ পড়ে এসে আব্বু-আম্মুর কাছে সালামির জন্য বসে থাকতাম। এখন দেখা যায় উল্টোটা। আমি নামাজ পড়ে এসে দেখি সবাই বসে আছে সালামির জন্য।
সালামি একদমই পান না?
নাঈম : না ভাই। নাইন টেন পর্যন্ত আমি যেটা আগে করতাম, সালামির জন্য বসে থাকতাম। এখন নতুন জেনারেশন বসে থাকে। চোখের সামনে একটা পরিবর্তন দেখছি।
সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এনটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে আপনাকে ঈদের শুভেচ্ছা।
নাঈম : আপনাদেরও শুভেচ্ছা। আমার জন্য দোয়া করবেন।