প্রেমিকাকে ভিডিওকলে রেখে ড্রেসিংরুমে ফুটবলারের আত্মহত্যা
প্রেমিকাকে ভিডিওকলে রেখে ড্রেসিংরুমে এক ফুটবলারের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের নবনির্মিতব্য ড্রেসিং রুমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন এক ফুটবলার। শনিবার (৬ মে) দিনগত গভীর রাতে প্রেমিকাকে প্রথমে আত্মহত্যার সরঞ্জামাদির ছবি পাঠিয়ে ও পরে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে পুলিশ এবং ফুটবলারের বোন জানিয়েছেন।
আত্মহননকারী ফুটবলার সোহেল জমাদ্দার (২৩) ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার রায়াপুর বটতলা এলাকার হাফিজ জমাদ্দারের ছেলে। সোহেল ঢাকার সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনূর্ধ্ব ১৭ দলের গোলরক্ষক ছিলেন। আট মাস বয়সী ছেলে সন্তানের বাবা সোহেল।
সহ খেলোয়ার মো. রায়হান বলেন, সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনূর্ধ্ব ১৭ দলে গোলরক্ষক হিসেবে দুই বছর খেলেছে সোহেল। বর্তমানে বরিশালের বিভিন্ন দলে খেলে। আউটার স্টেডিয়ামের জন্য নির্মিতব্য ড্রেসিং রুমের রাথরুমে ফ্যানের আংটার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে।
তার বোন শান্তা জানান, সোহেলের বিয়ের আগে বরিশাল নগরীর একটি বেসরকারি নার্সিং কলেজের এক ছাত্রীর সাথে প্রেম ছিল। তাদের সেই সম্পর্ক টেকেনি। পরে তাকে অন্যত্র বিয়ে করানো হয়। বর্তমানে আট মাস বয়সী ছেলের বাবা সোহেল।
শান্তা আরও জানান, সকলের অজান্তে সেই মেয়ের সাথে আবারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সোহেল। এ নিয়ে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। কোনোভাবে দুই জনকে ফেরানো যায়নি।
শান্তা বলেন, শনিবার ভাইয়ের স্ত্রীর সাথে বিরোধ হয়। সে সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে গেছে। আজ (রোববার) সোহেলের খেলা ছিল। তাই শনিবার স্টেডিয়ামে আসে। সন্ধ্যার পর খেলোয়াড়রা সোহেলের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি। আমিও যোগাযোগের চেষ্টা করে পাইনি। পরে সোহেলের প্রেমিকা জানিয়েছে, সোহেল তার ইমোতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে জানিয়ে রশি ও একটি মইয়ের ছবি পাঠিয়েছে। রাতে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
শান্তা জানান, বিষয়টি জানার পর সোহেলের ইমো নম্বরে কল দিলেও কেউ রিসিভ করেনি। সকালে এসে তার লাশ পেয়েছেন।
ঘটনাস্থলে থাকা কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রশি দিয়ে ঝোলার পর রশি ছিড়ে নিচে পড়ে গিয়েছে। এতে মাথা ফেটে গেছে।
এসআই শহীদুল আরও বলেন, ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যার আলামত পাওয়া গেছে। আত্মহত্যার পূর্বে পাঠানো ছবিও পাওয়া গেছে। মোবাইলফোন আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যুর মামলা হবে। অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।