ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কামারদের সঙ্গে পুলিশের বৈঠক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও নাসিরনগর উপজেলার ২৫টি গ্রামে অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন হাজারের বেশি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার (৮ মে) ভোর পর্যন্ত তিন দিনে অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার।
এদিকে দুই উপজেলার কামারদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেছে পুলিশ। বিভিন্ন গ্রামের কামাররা যেন প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো লোহার অস্ত্র তৈরি না করেন সে জন্য তাদের নিয়ে আলোচনা সভায় সতর্ক করা হয়। যারাই দেশীয় অস্ত্র বানাতে আসবে তাদের নাম ঠিকানা রেখে পুলিশকে অবহিত করার বিষয়ে একমত হন তাঁরা।
নাসিরনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে নাসিরনগর বেশকিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় কয়েক হাজার লোক আহত হয় এবং বেশ কয়েকজন নিহত হয়। সম্প্রতি ঈদের দিন ভলাকুট ইউনিয়নের খাগালিয়া গ্রামে ধান মাড়াইয়ের জায়গা দখল নিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কৃষক জামাল হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারে বিষয়ে নাসিরনগর থানা পুলিশকে নিদের্শ দেন। গত শুক্রবার থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার প্রায় ২৫টি গ্রামে অভিযান চালিয়ে তিন হাজার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এসব অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় অস্ত্র আইনে তিনটি মামলায় আট জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে কাতরা, সড়কি, রামদা, বল্লম, টেঁটা, ফলা ও চল। যেসব গ্রাম থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে সেসব গ্রাম হলো নূরপুর, হরিপুর, নরহা, চিতনা, ধরমণ্ডল, শংকরাদহ, গোকর্ণ, কুণ্ডা, কুণ্ডা জেলেপাড়া, শ্রীঘর, চাপরতলা, ভোলাউক, উরিয়াইন, আতুকুড়া, মুকবুলপুর ও পূর্বভাগ।
হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের গ্রামে প্রায় সময়ই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারি হয়। পুলিশ আমাদের কাছে অস্ত্র উদ্ধারে সহযোগিতা চেয়েছে। আমরা গ্রামবাসীকে নিয়ে আলোচনা করে সব দেশীয় অস্ত্র পুলিশের হাতে জমা করে দিয়েছি।’
ভলাকুট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রুবেল মিয়া বলেন, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের এ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার কাজকে আমরা স্বাগত জানাই। অভিযান সবসময় অব্যাহত থাকুক। অভিযান অব্যাহত থাকলে এলাকায় খুন-খারাবিসহ মারামারি কমে আসবে।’
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়া হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলায় এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রাম্য এলাকায় যাতে মারা মারি দাঙ্গা সৃষ্টি না হয়, শান্তিশৃঙ্খলা অটুট রাখতে নিয়মিত চলবে এ অভিযান। পাশাপাশি মাদক উদ্ধারেও তিনটি সীমান্তবর্তী উপজেলায় অভিযান চলছে।’