আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার প্রসঙ্গে যা বললেন জাহাঙ্গীর আলম
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে বলেছেন, ‘আমি শুনেছি আমাকে আবার বহিষ্কার করা হয়েছে। আমিতো আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক। আমাকে বহিষ্কার করতে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাকর্মী কেন লাগবে? আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমাকে অন্তত পার্টির (আওয়ামী লীগের) সমর্থক হিসেবে থাকার জায়গাটুকু দেন।’
বহুল আলোচিত সাবেক এই মেয়রকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের পরদিন আজ মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে নগরীর ছয়দানা এলাকার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ১৮ মাস কেঁদেছি, চোখের অনেক জল ফেলেছি। আজ আর কাঁদব না, চোখের জল ফেলব না।’ তিনি বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে থেকে সত্য প্রকাশ করতে। আমি আমার সংগঠনের আদর্শ ও নিয়ম-নীতির বাইরে কোন কিছু করিনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সত্য তথ্যটা উপস্থাপনের জন্য ১৮ মাস আমি বিভিন্নজনের ঘরের দরজায় ঘুরেছি। আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় প্রত্যেক নেতার অফিসে অফিসে, ঘরের দরজায় গিয়েছি। কিন্তু, কেউ আমাকে সুযোগ করে দেয়নি। তাঁর কাছে আমাকে পোঁছানোর কোনো পথ রাখা হয়নি। পার্টির কর্মীদের কেউ যদিবিপদে পড়েন তবে স্থানীয়, জাতীয় বা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তা নিয়ে আলোচনা করেন, সমাধান করেন বা সমাধানের পথ খুঁজে বের করেন। কিন্তু তারা তা করেন নি।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জন্মের পর থেকে আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। আওয়ামী লীগ আমার একটা ভালবাসার জায়গা, নৌকা আমার একটা ভালবাসার জায়গা, প্রধানমন্ত্রী আমার শ্রদ্ধার জায়গা। আমি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। আওয়ামী লীগ থেকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলাম। ২০১৮ সালে আমি নৌকা প্রতীকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হই।’
জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার পর তিন বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি। মেয়র হিসেবে তিন বছর দায়িত্ব পালন করার পর শুধুমাত্র অন্য জেলার লোকজনের কিছু অবজেকশনের পরিপ্রেক্ষিতে আমার মেয়র পদটা স্থগিত করে দিয়েছে। আমাকে আর মেয়রের পদে বসতে দেওয়া হয়নি। আমি জানি, আমি শপথ নিয়েছিলাম পাঁচ বছরের জন্য। আমি নীতি এবং আদর্শের জায়গায় ছিলাম, আমার ওপরে ন্যায় বিচার হয়নি। আমি আদালত পর্যন্ত গিয়েছিলাম। কিন্তু, নানা কারণ দেখিয়ে দেখিয়ে আমার সময়টা পার করা হয়েছে।’
জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ১৮ মাস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য এবং কেন্দ্রীয় সকল নেতার দরজায় আমি গিয়েছি। সবাইকে বলেছি, আমাকে একটু সত্য বলার সুযোগ করে দিন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আপনারা আমার কথা বলুন, না হয় আমাকে কথা বলার জন্য একটু সুযোগ করে দিন। কিন্তু, কেউ আমাকে সুযোগ দেয়নি। সকল নেতৃবৃন্দ আমাকে বলেছে—তুমি কোনো অন্যায় করোনি, তোমার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে তোমার বিষয়টা বলব। কিন্তু, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, প্রধানমন্ত্রী কাছে এ বিষয়টিকে উপস্থাপন করা হয়নি।’