কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় জাতিসংঘে নিন্দা জানালেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের পবিত্র মূল্যবোধকে অবমাননা করে কিছু দেশে প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআনের কপি পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে তাঁর কার্যালয়ে ওআইসির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত মুহিত এ নিন্দা জানান।
বাংলাদেশের নেতৃত্বে এ বৈঠকে ওআইসির সদস্য রাষ্ট্রের মধ্য থেকে মিশর, সৌদি আরব, মৌরিতানিয়া ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের প্রতিনিধিবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহিত জাতিসংঘের মহাসচিবকে বলেন, ‘পবিত্র কোরান পোড়ানোর এ ঘৃণ্য কাজটি শুধু বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকেই গভীরভাবে আঘাত করেনি, বরং এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং ব্যক্তি বিশ্বাসের নীতিরও পরিপন্থী।’ তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা সহিংসতার জন্ম দিতে পারে এবং বিভিন্ন দেশে শান্তি ও নিরাপত্তাকে অস্থিতিশীল করতে পারে।’
এ প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রদূত মুহিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের কথাও তুলে ধরেন, যারা ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষের স্বীকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবকে ইসলামফোবিয়া, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য এবং পবিত্র কোরান ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীক অবমাননাসহ সকল ধরণের ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা মোকাবিলায় জাতীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রকে অনুরোধ করারও আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মুহিত।
আজ শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ খবর জানিয়ে বলা হয়, জাতিসংঘ মহাসচিব ওআইসি সদস্যদের সাথে এ বিষয়ে গভীর সংহতি প্রকাশ করেন এবং ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক এই জঘন্য ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। তিনি ওআইসি প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেন যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ধর্মবিরোধী ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিশ্বব্যাপী চলমান প্রচেষ্টাকে জোরালোভাবে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে তার অবস্থান থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
ইতিপূর্বে রাষ্ট্রদূত মুহিতের নেতৃত্বে ওআইসির প্রতিনিধিরা গত ১৪ জুলাই সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা কোরোসি এবং ২০ জুলাই নিরাপত্তা পরিষদেও প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত ডেম বারবারা উডওয়ার্ডের সঙ্গে দেখা করেন। এ বৈঠকগুলোতেও তারা একই ধরণের উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং নিন্দা জানান।