ঘরও নেই, জমিও নেই কী করবেন দীনেশ, কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এমন সময় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ঘোষণা আসে গৃহহীনদের ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। দীনেশ এ কথাটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানতে পেরে যোগাযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে। কিছু কাগজপত্র জোগাড় করে জমা দিয়েই পেয়ে যান একটি ঘর। এখন সেই ঘরেই দীনেশের সুখের সংসার। বলছিলাম ফরিদপুরের সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর এলাকার ঘরহীন দীনেশের কথা। তার এলাকায় তৈরি হয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। সেখানেই তিনি পরিবার নিয়ে সুখে বসবাস করছেন।

দীনেশ জানান, তিনি কখনও ভাবেননি এমন একটি সেমি পাকা ঘরে বাস করবেন। তার ঘরে থাকবে বিদ্যুৎসহ নানা সুব্যবস্থা। আর এটা সম্ভব হয়েছে সরকারের এমন মহৎ উদ্যোগের কারণে। এজন্য তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

অসহায় ঘরহীন এসব মানুষের কেউ থাকতেন রাস্তা বা রেললাইনের পাশে, কেউ অন্যের বাড়ি বা জমিতে আশ্রিত, কেউবা নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত। ছিল না নিজের কোনো ঠিকানা কিংবা কোনো মাথা গোঁজার ঠাঁই। ছিন্নমূল এসব মানুষের অসহায়ত্বকে উপলব্ধি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ মুজিববর্ষ উপলক্ষে তিনি ঘোষণা দেন দেশের কোন মানুষ আশ্রয়হীন থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রীর এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কাজ করছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুর সদর উপজেলার ৭৩১টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৩১২টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৫৩টি ও তৃতীয় পর্যায়ে ২৬৬টি গৃহ নির্মাণ করে উপকারভোগীদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুরের সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী জানান, অসহায় মানুষগুলো কখনও ভাবেননি তাদের নিজস্ব একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে। সেখানে তারা পেয়েছেন দুই শতাংশ জমিসহ একটি সেমিপাকা ঘর। আশ্রয়ণের সাইটগুলোতে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। উপকারভোগীদের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। উপকারভোগীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, গঠন করা হয়েছে সমবায় সমিতি। 

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহ্সান তালুকদার জানান, আগামী ৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী চতুর্থ পর্যায়ের গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করবেন। এ পর্যায়ে দেশের অন্যান্য উপজেলার সঙ্গে ফরিদপুর সদর উপজেলাও ‘ক’ শ্রেণির গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে।’