সুষ্ঠু নির্বাচনি পরিবেশ বজায় রাখতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর আহ্বান
নির্বাচনের সময় সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। আজ শুক্রবার (১০ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের আয়োজনে ঢাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অডিটোরিয়ামে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বিগত পাঁচ বছরের উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনাবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব স্তরের মানুষ যাতে উন্নয়নের সুফল ভোগ করতে পারে, সেজন্য স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে সরকার। জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা হাতের নাগালে পায় সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’
বাংলাদেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ উত্তরোত্তর পৃথিবীর বুকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবে।’
বিএনপি শাসনামলের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো মাত্র এক হাজার ১০০ মেগাওয়াট। মানুষ তখন লোডশেডিংয়ের জ্বালায় অস্থির হয়ে বলতো বিদ্যুৎ যায়না মাঝে মাঝে আসে। দেশের শিল্প উৎপাদন কৃষি উৎপাদন প্রচণ্ডভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। কৃষক বিদ্যুৎ ও সারের দাবিতে আন্দোলন করতে যেয়ে গুলি খেয়ে মরেছে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশে কোনো কৃষকের বিদ্যুৎ বা সারের দাবিতে আন্দোলন করার প্রয়োজন পড়েনি। আজকের বাংলাদেশ শতভাগ বিদ্যুতায়নের দেশ। যা এক সময় কল্পনাও করা যেত না।’
‘বাংলাদেশ ভৌগোলিক আয়তনে ছোট্ট ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘১৭ কোটি মানুষের খাদ্য উৎপাদন ও খাবারের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিভিন্ন অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বেই খাদ্য সামগ্রীর দাম বাড়লে আমাদের দেশেও তার প্রভাব পড়েছে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমাদের এখানে কোনো খাদ্য সংকট তৈরি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি ও দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।’
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের প্রান্তিক মানুষ যাতে চিকিৎসা সেবার আওতায় আসতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। অথচ বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে তা বন্ধ করে দেয়। সংকীর্ণ দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে বিএনপি কখনও যেতে পারেনি। আমাদের অনেকের চিন্তাভাবনায় নেতিবাচকতা রয়েছে। এই নেতিবাচকতা দূর করে ইতিবাচকতায় আসতে হলে মনোজাগতিক একটি পরিবর্তন দরকার। মানুষের মন মানসিকতার পরিবর্তন একদিনে হয় না। এর জন্য দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন। সমাজ ব্যবস্থা মানুষের চিন্তা-ভাবনার জগতে প্রভাব বিস্তার করে। এই নেতিবাচকতার ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃশ্যমান শতশত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেখেও অনেকে তা অস্বীকার করে। পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলের মত বড় প্রকল্পের কথা না হয় বাদই দিলাম। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ এবং পানির সুবিধা নিশ্চিত করার কৃতিত্বটুকুও অনেকে সরকারকে দিতে চায় না। ভালো কাজে উৎসাহ ও উদ্দীপনার প্রয়োজন রয়েছে। তাহলে মানুষ আরও বেশি ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা পায়।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সারোয়ার হোসেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী মো. আলি আখতার হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী প্রমুখ।