স্বাস্থ্যসেবা বিকেন্দ্রীকরণ শুরু হয়েছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা শুধু শহরকেন্দ্রিক নয়, এর পরিধি একেবারে গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেটাই চান। আমরা স্বাস্থ্যসেবা বিকেন্দ্রীকরণ শুরু করেছি।’
গতকাল শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা ইউনাইটেড কনভেনশন সেন্টারে ‘পিএইচএ গ্লোবাল সামিট ২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আমাদেরকে স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে কাজ করতে হলে চিকিৎসকদের সুযোগ-সুবিধাগুলো নিয়েও ভাবতে হবে। নার্সদেরকে নিয়ে আমাদের আরও পরিকল্পনা করতে হবে। আজকের এই আয়োজন সরকারের কাজকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। এই প্রোগ্রাম শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।’
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘চিকিৎসা প্রশিক্ষণার্থী বিনিময় কর্মসূচির মতো উদ্যোগগুলো শুধু আন্তঃসাংস্কৃতিক শিক্ষাকে উৎসাহিত করবে না, বরং আমাদের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সম্মিলিত অভিজ্ঞতাকেও সমৃদ্ধ করবে। দেশে ও দেশের বাইরে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।’
আয়োজকরা জানান, এবারের সম্মেলনে দুই হাজারের বেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও মেডিকেল শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। স্পিকার হিসেবে রয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ৫০ জন চিকিৎসাবিজ্ঞানী এবং দেশের ১০০ জনেরও বেশি খ্যাতিমান চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ। ৯ দিনের সম্মেলনে থাকছে ৩০টির বেশি কোর্স ও সাইন্টিফিক সেশন। দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন শুধু বাংলাদেশেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম।
প্ল্যানেটারি হেলথ একাডেমিয়ার (পিএইচএ) চেয়ারপারসন ডা. তাসবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম, জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান, বিসিপিএস সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ইউনাইটেড হেলথ কেয়ারের সিইও ডা. মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্ল্যানেটারি হেলথ একাডেমিয়া (পিএইচএ) এর ট্রাস্টি ডা. নাসির খান।
পিএইচএ’র চেয়ারপারসন ডা. তাসবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল চিকিৎসার শিক্ষাক্রমে যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। উন্নত দেশগুলোর তুলনায় আমাদের মেডিকেল শিক্ষা চার থেকে পাঁচ বছর পিছিয়ে রয়েছে। এ কারণে সম্প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। আমরা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে মিলে কারিকুলাম উন্নয়নের চেষ্টা করছি। আশা করি চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে একটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’
সম্মেলনে রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস লন্ডন, রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এডিনবার্গ, রয়েল কলেজ অব অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্ট, ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন, ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশন, আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির প্রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কৃতরা হলেন—রংপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ বায়েজিদ সরকার, রংপুর মেডিকেল কলেজের সজিব মিয়া, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের পলাশ হোসেন, পাবনা মেডিকেল কলেজের তাহসিন আহমেদ আলভী ও রংপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের মাহবুব আলম।
এ ছাড়া ২০২৩ সালে শিক্ষা, চিকিৎসা শাস্ত্রে, স্বাস্থ্যসেবা তথা জনস্বার্থে বিশেষ অবদানের জন্য আটজন চিকিৎসককে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দিয়েছে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস। ফেলোশিপ পাওয়া আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসকরা হলেন ডা. সারাহ ক্যাথরিন ক্লার্ক, অধ্যাপক টিমোথি গ্রাহাম, ডা. রানী ঠাকুর, ডা. ফ্রাজ মীর, ডা. রোয়ান বার্নস্টেইন, অধ্যাপক ডেভিড ট্যাগার্ট, ডা. জগৎ নরুলা এবং ডা. সার্জিও লারাচ।