বেইলি রোড ট্র্যাজেডি : ইতালি প্রবাসী পরিবারের ৫ সদস্যের দাফন
রাজধানির বেইলী রোড ট্র্যাজেডির ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ইতালি প্রবাসীর পরিবারের পাঁচ সদেস্যের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতদের গ্রামের বাড়ি শাহবাজপুর ইউনিয়নের খন্দকারপাড়া সৈয়দবাড়ি।
আজ শুক্রবার (১ মার্চ) বাদ আসর জানাজা শেষে তাদের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বাড়িতে ভিড় জমিয়েছে আত্মীয়স্বজনসহ প্রতিবেশীরা।
নিহতরা হলেন উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৫০), তাঁর স্ত্রী স্বপ্না (৩৫), মেয়ে কাশফিয়া (১৭) ও নূর (১৩), ছেলে আব্দুল্লা (৭)। তারা রাজধানীর মধুবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
সপরিবারে ছেলেকে হারিয়ে মা হেলেনা বেগম বিলাপ করছেন। তিনি বিলাপ করে বলছেন, ‘আমার ছেলে বিদায় নিতে আওয়ার কথা ছিল। অহন শেষ বিদায় নিতে আইলো। আমার ছেলেরে কেউ আইন্না দেও। কেউ আমার ছেলেরে আইন্না দিতারবা। আমার ত সব শেষ। ছেলে, বৌ, নাতি-নাতনি কেউ নাই। আমি অহন কেমনে বাঁচুম। তোমরা কেউ হেরারে আইন্না দেও।’
নিহত কাউসারের পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি প্রথমে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তিনি ইতালি পাড়ি দেন। এর মধ্যে তাঁর দেশে আসা-যাওয়া ছিল। গত দেড় মাস আগে প্রায় দুই বছর পর ইতালি থেকে দেশে ফেরেন তিনি। তার স্ত্রী-সন্তানদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা ও টিকেট সম্পন্ন করেছিলেন। আগামী ২০ মার্চ তাদের নিয়ে কাউসার ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। গতকাল রাতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে যান তিনি। সেখানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সপরিবারে নিহত হন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে দগ্ধ হয়ে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছে অন্তত ২২ জন। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে। ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে উদ্ধারকাজে সহায়তা করে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য, এনএসআই, বিজিবি ও র্যাব।