অবন্তিকার আত্মহত্যা : শিক্ষক-সহপাঠীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি পুলিশের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন। আজ রোববার (১৭ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলার ভিত্তিতে কুমিল্লা পুলিশের চাওয়া অনুযায়ী দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, ইতোমধ্যে দোষীদের কুমিল্লা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আম্মান ও দ্বীন ইসলামের খণ্ডিত সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তবে এই সংশ্লিষ্টতার গভীরতা কতখানি, সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্নভাবে নানা তথ্য উঠে এসেছে। এর খণ্ডিত অংশের সত্যতা হয়ত আছে। তবে গণমাধ্যমের সব তথ্য মিলছে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা আছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। ইতোমধ্যে দোষীদের কুমিল্লা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘ফাইরুজ অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছেন কুমিল্লার কোতোয়ালি এলাকায়। তবে তার অভিযোগের বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার লালবাগ বিভাগে। ঘটনা সম্পর্কে ঢাকা মহানগর পুলিশের সংবেদনশীলতা শুরু থেকেই ছিল। ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। ১৫ মার্চ রাতে তিনি তার ফেসবুকে যে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন, বলা যায় সুইসাইডাল নোট হিসেবে। সে যে সুইসাইডের পথ বেছে নিয়েছে। সেটি স্টাডি করে ও অন্যান্য তথ্য নিয়ে চলতে থাকে। ফাইরুজ অবন্তিকার মা তাসলিমা বেগম কোতোয়ালি থানায় আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকীকে আসামি করা হয়েছে।’
মহিদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘অভিযোগ ওঠার পর থেকেই দুজনই আমাদের অবজারভেশনে ছিলেন, ওয়াচে ছিলেন। তদন্তের স্বার্থে যখন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা পুলিশ মনে করে যে, আমাদের অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন, তখন আমরা তাদের আটক করি। আজকে আমরা আটক দুজনকে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত যা যা ঘটেছে ডিএমপির পক্ষ থেকে আমাদের যতটুকু কাজ তা করেছি। আমরা আশা করছি, বাকি কাজ কুমিল্লা জেলা পুলিশ করবে। এ ধরনের আত্মহনন অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা সবাই বিশ্বাস করি... যে কোনো ধরনের আত্মহনন ধর্মীয়ভাবে অন্যায়, সামাজিকভাবেও অন্যায়। আমরা মনে করি প্ররোচণার দায়ে দায়ী ব্যক্তিও সমান অপরাধী। যদি কারো প্ররোচণা থেকে থাকে তবে সেটি বেড়িয়ে আসবে। সে অনুযায়ী যারা যারা জড়িত থাকবে আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’