দেশের উন্নয়নে পুরোহিত-সেবাইতদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ : ধর্মমন্ত্রী
ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, ‘দেশ ও জাতির উন্নয়নে সেবাইত-পুরোহিতদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারাই পারে হিন্দু (সনাতন) ধর্মের মানুষের মধ্যে সঠিক ধর্মীয় জ্ঞানের প্রসার ঘটিয়ে আদর্শ ও নিষ্ঠাবান মানুষ গড়ে তুলতে।’
আজ বুধবার (২৯ মে) রাজধানীর বাসাবোতে ধর্মরাজিক বৌদ্ধবিহার কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে ঢাকা বিভাগীয় পুরোহিত ও সেবাইত সম্মেলন-২০২৪ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সমাজে সব ধর্মের মানুষের কাছেই তাদের ধর্মীয় নেতাদের একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সমাজের অধিকাংশ মানুষ তাদেরকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে, সম্মান করে। বিভিন্ন পরামর্শের জন্য তাদের শরণাপন্ন হয়ে থাকে। তাদের আদেশ-নির্দেশ মেনে চলে। এই শ্রেণির মানুষগুলোকে আমরা যদি আর্থিকভাবে সচ্ছলতা দিতে পারি এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে যদি আমরা তাদেরকে শানিত বা দক্ষ করে তুলতে পারি, তাহলে দেশ ও জাতির কল্যাণে তারা অনেক বেশি অবদান রাখতে পারবে। এ কারণেই অন্যান্য ধর্মের ন্যায় হিন্দু ধর্মের প্রকল্প তৈরি করে আমরা পুরোহিত-সেবাইতদেরকে প্রশিক্ষণের আওতায় এনেছি।’
মো. ফরিদুল হক খান বলেন, ‘আবহমানকাল থেকেই বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পীঠস্থান। বিভিন্ন ধর্ম-গোত্রের মানুষ এখানে মিলেমিশে বসবাস করে। উৎসব-পার্বনে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এটি আমাদের ঐক্য ও শক্তির প্রতীক। এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে পুরোহিত-সেবাইতরা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন।’
হিন্দু সম্প্রদায়ের কল্যাণে গৃহীত প্রদক্ষেপ তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে, রুপকল্প-২০৪১। এ ছাড়া জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে আমরা এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা সবাইকে সমান তালে এগিয়ে নিতে চাই। সব ধর্মের মানুষকে সমান গুরুত্ব দিয়ে তাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। আগামী দিনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে আরও বেশি কাজ করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’
ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বীরেন শিকদার, কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, ধর্ম সচিব মু আ হামিদ জমাদ্দার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত পাল ও এসআরএসসিপি প্রকল্পের পরিচালক প্রফেসর শিখা চক্রবর্তীসহ অন্যান্যরা।
ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রকল্পের অধীনে পুরোহিত ও সেবাইতদের নেতৃত্বদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি, তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সংহত করতে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল এক হাজার ৬০০ জন পুরোহিত ও সেবাইতকে ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।