ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি ক্ষোভ ঝারলেন নিহত কনস্টেবল সুমনের স্ত্রী
পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামীকে গতকাল শুক্রবার আন্দোলনকারীরা পিটিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় সুমনের স্ত্রী মিতু বিশ্বাস পাগলপ্রায়। এ দম্পতির ৬ বছরের কন্যা স্নিগ্ধা। মা-মেয়ে দুজনের আহাজারি যেন থামছেই না।
গতকাল শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
হাসপাতালে দেখা যায়, পুলিশ কর্মকর্তা, আত্মীয়-স্বজন যাকেই পাচ্ছেন তাকে জড়িয়ে ধরে, পায়ে ধরে স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানাচ্ছেন স্ত্রী মিতু বিশ্বাস। তার আহাজারি দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারছেন না কেউই। রাতে খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক ও খুলনা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি মঈনুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে সান্ত্বনা দিতে দেখা গেছে। কিন্তু, শান্ত হতে পারেননি মিতু ও স্নিগ্ধা।
মিতুর আহাজারির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সে ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক ও খুলনা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি মঈনুল হককে উদ্দেশ্য করে আঙুল তুলে উচ্চস্বরে মিতু ক্ষোভের কথা বলতে থাকেন, ‘আমার সুমন কোথায়, শুধু ডিউটি, ডিউটি আর ডিউটি…সকালে বিকালে ডিউটি। আমার জবাব দিয়ে যান.... সুমন কই’।
জানা গেছে, বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার নিহত সুমন ঘরামী স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে নগরীর বয়রা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি খুলনা মহানগর পুলিশের সোনাডাঙ্গা জোনের সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাসের দেহরক্ষী ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় খুলনার মোহাম্মদনগর এলাকায় আন্দোলনকারীদের পিটুনিতে নিহত হন তিনি।
সহকারী কমিশনার সৌমেন বিশ্বাস বলেন, আমি ও সুমন একসঙ্গে ছিলাম। সংঘর্ষের একপর্যায়ে আমরা দলছুট হয়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে ইউনিফর্ম খুলে প্রায় ৪ ঘণ্টা ড্রেনের মধ্যে ছিলাম আমি। এর কোনো একসময় আন্দোলনকারীরা কনস্টেবল সুমনকে নৃংশসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।
এ বিষয়ে মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আন্দোলনকারীদের হামলায় পুলিশ সদস্য সুমন নিহত হয়েছেন।