কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা, গুলিবিদ্ধ ৫
কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বিরুদ্ধে হামলা ও গুলির অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে নগরীর পুলিশ লাইন্স এলাকায় শিক্ষার্থীদের মিছিলের পেছন থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা করে তারা। এসময় মুহুর্মুহু গুলির শব্দ শোনা গেছে।
এ ছাড়া নগরীর রাণীর দিঘির দক্ষিণ পাড় ও বাগিচাগাঁও এলাকায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের মারধর ও গুলি করে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত পাঁচজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বাগিচাগাঁও ও পুলিশ লাইন্স এলাকায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করতে দেখা যায়। এ ছাড়া এসময় হকিস্টিক, লাঠি ও স্টাম্প দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে দেখা যায়।
জানা গেছে, আজ সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা জিলা স্কুল এলাকায় গণমিছিলের উদ্দেশে অবস্থান নেন দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী। এসময় তারা বিভিন্ন ধরনের গান, কবিতা আবৃত্তি ও স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের বাধা দিতে দুই পাশে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। তাদের উদ্ধার করতে আসে ছাত্রদের আরেকটি মিছিল। সেটি সার্কিট হাউস মোড়ে এসে অবস্থান নেয়। প্রশাসন ও পুলিশের আশ্বাসে তারা একত্রিত হয়ে মিছিল শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সামনে যায়। ডিসি অফিস, কুমিল্লা কারাগার, সিটি করপোরেশন ভবনের সামনে দিয়ে তারা পুলিশ লাইন্স আসে। এ সময় কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর মিছিলের পাশে ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীদের অবস্থান দেখে শিক্ষার্থীরা চলে যায়। মিছিল শেষ হতেই পেছন থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি শুরু করে ছাত্রলীগ যুবলীগ নেতাকর্মীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। কয়েকজন শিক্ষার্থী রাস্তায় পড়ে গেলে তাদের বেদম পিটুনি দিতে দেখা যায়। এ ছাড়া আন্দোলনকারী নারী শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় ও লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়।
এরপর টাউনহল মোড় থেকে টমসম ব্রিজ রোডের সিএনজি স্টেশন, ভিক্টোরিয়া কলেজ গেইট, রাজগঞ্জ মোড়, জিলা স্কুল গেইটসহ বিভিন্ন গলিতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে শর্টগান, রামদা, লাঠি নিয়ে মহড়া দেন পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক দেখলেই মারধর ও হুমকি দিতে থাকেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া শিক্ষার্থী জোবায়দা ইয়াসমিন মুমু বলেন, সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে আজকে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি। এখানে আমাদের একটাই দাবি সরকারের পদত্যাগ। সরকারের পদত্যাগ ছাড়া শিক্ষার্থী সমাজ আর ঘরে ফিরবে না। কুমিল্লার সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন পয়েন্ট পয়েন্টে অবস্থান করে আমাদের বাধা দিচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার সামনে আমার এক ভাইকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। আরেকজনের হাতে গুলি লেগেছে।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খোকন বলেন, আমরা কারও ওপর হামলা করিনি। ছাত্রদের সঙ্গে শিবির ও বিএনপির লোকেরা একাকার হয়ে দেশকে নাশকতার দিকে নিতে চায়। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি।