নরসিংদীতে সাংবাদিককে গুলি করে ও পিটিয়ে আহত
নরসিংদীর রায়পুরায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মো. মনিরুজ্জামান মনির (৪০) নামে এক সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন। এ সময় কাঠ ও হ্যামার দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায় শহরের শ্রীরামপুর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় মনিরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার রায়পুরা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি রায়পুরা রিপোর্টাস ক্লাবের সভাপতি। তাঁর বাড়ি উপজেলার মেথিকান্দা গ্রামে।
স্থানীয় জানায়, রায়পুরা উপজেলার মেথিকান্দা এলাকার লিয়াকত আলী ওরফে লইক্কা মিস্ত্রি ও হযরত আলী ওরফে হরজু সমর্থকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। লিয়াকত আলী সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনিরের দাদা হন। পূর্ব বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। আজ দুপুরে মনির শ্রীরামপুর বাজার থেকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে উপজেলা পরিষদে ফিরছিলেন। এ সময় শ্রীরামপুর বাজারের পাশেই আগে থেকে ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর হামলা করে। এ সময় তিনি আত্মরক্ষায় একটি দোকানে ঢুকে গেলে সেখান থেকে বের করে বাইরে এনে হ্যামার ও কাঠ দিয়ে পিটিয়ে পায়ে ও হাতে কয়েক রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনার সময় রায়পুরা থানা পুলিশের কোনো তৎপরতা না থাকায় সার্বিক সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনীর দল হাসপাতালে গিয়ে আহত সাংবাদিক মনিরের খোঁজখবর নেন এবং উপজেলা শহরে নিরাপত্তা জোরদার করেন।
আহত সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, শ্রীরামপুর বাজারের এক ব্যবসায়ীর দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে সেখানে সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাই। সেখান থেকে উপজেলা পরিষদে ফেরার পথে শহীদ মিয়ার চালের দোকানের সামনে সন্ত্রাসীরা আমার ওপর গুলি করে, হ্যামার দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আমি দেশের সেবায় কাজ করি। সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ধরে রায়পুরা উপজেলাবাসীর ক্ষতি করে যাচ্ছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিল। এজন্য তারা আমার ওপর হামলা করেছে। আমি রায়পুরা উপজেলার সবাইকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ করছি।
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রঞ্জন কুমার বর্মণ বলেন, সাংবাদিকের হাতে এবং পায়ে গুলি লেগেছে। মাথায়ও গুরুতর আঘাত আছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছি।
এ ঘটনায় নরসিংদী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাব, রায়পুরা উপজেলা রিপোর্টার্স ক্লাব, রায়পুরা সাংবাদিক ফোরাম, রায়পুরা প্রেসক্লাবসহ নরসিংদী জেলা ও উপজেলার সাংবাদিক সংগঠনসহ নেতারা তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।