‘২ হাজার কোটি টাকার হদিস নেই, জামিন চাইতে আসছেন’
অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ডেসটিনির চেয়ারম্যান সাজাপ্রাপ্ত মোহাম্মদ হোসেন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনের জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) আবেদনটি খারিজ করেন। ফলে তাকে আপাতত কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এ দুজনের জামিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে তাদের আরও কিছুদিন ভেতরে থাকা উচিত।’
এ সময় রফিকুল আমীনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘রফিকুলের সাজা হয়েছে ১২ বছর। আর কারাগারে আছেন ১১ বছর ১১ মাস।’
পরে আপিল বিভাগ বলেন, ‘গাছ লাগানোর কথা বলে গ্রাহকের কাছ থেকে যে টাকা নিয়েছেন, সেগুলো ফেরত দিয়েছেন?’ রফিকুলের আইনজীবী বলেন, ‘গাছ তো দেওয়ার কথা না।’ তখন আপিল বিভাগ বলেন, ‘২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার হদিস নেই। জামিন চাইতে আসছেন!’
এর আগে একই মামলায় জামিন চেয়ে রফিকুল আমীন আবেদন করলে গত বছরের ২ মার্চ খারিজ করেন হাইকোর্ট। এই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে একই বছর ফের জামিন আবেদন করেন রফিকুল আমীন। গতকাল শুনানি নিয়ে লিভ টু আপিলটি খারিজ করে দেন আদালত।
এদিকে একই মামলায় হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ডেসটিনির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের জামিন আবেদন পুনরুজ্জীবিত চেয়ে করা আবেদন শুনানির জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন রাখেন আপিল বিভাগ।
ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই ডেসটিনি গ্রুপের এমডি রফিকুল আমীনসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা হয়। এতে মোট চার হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
এর একটি মামলায় ২০২২ সালের ১২ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন, কোম্পানির প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদসহ ৪৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেন। পরে সাজা ও জরিমানার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে গত বছরের ২২ জুন রফিকুলের ২০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড স্থগিত করেন হাইকোর্ট। অপর মামলাটি এখন সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।