স্বাভাবিক হয়নি শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া, ২১৯ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ
বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও স্বাভাবিক হয়নি শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার পরিস্থিতি। কারখানা খুলে দেওয়া হলেও বরাবরের মতোই আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপেটম্বর) শ্রমিকরা হাজিরা দিয়েই দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করলে ছুটি ঘোষণা করা হয় ১৩৩টি কারখানায়। উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ২১৯টি কারখানায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম।
তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তায় আজ পুলিশ, আর্মড পুলিশ, শিল্প পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের ছিলেন তৎপর। ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়ন করা হয় সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান, র্যাব-পুলিশের রায়ট কার।
স্থানীয়রা জানান, এদিন বিভিন্ন কারখানা খোলা থাকলেও বিভিন্ন দাবি নিয়ে কারখানার ভেতরেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। পরে পরিস্থিতি ক্রমাবনতিতে একে একে বিভিন্ন কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এদিকে, অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ভার্চুয়াল বটয়ম, মন্ডল নীটওয়্যারস লিমিটেড, সিগমা ফ্যাশনস লিমিটেড, হা-মীম গ্রুপ, ক্রশওয়্যার ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিডেট, জিন্স প্রোডিউসার লিমিটেড, অরুনিমা গ্রুপের অরুনিমা স্পোর্টসওয়্যার লিমিটেড এবং ডিএমসি এ্যাপারেলস লিমিটেড, এস এম নীটওয়্যারস লিমিটেড, আগামী এ্যাপারেলস লিমিটেড, মানতা এ্যাপারেলস লিমিটেডসহ আরও ৭৪টি পোশাক কারখানা।
শ্রমিকরা জানান, টানা ১০ দিনের বেশি সময় ধরে কারখানার ভেতরে ও সড়কে শ্রমিকরা দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। কিন্তু, মালিক পক্ষ শ্রমিকদের দাবি নিয়ে টালবাহানা করছে। কিছু কাখানায় আশ্বাস দিয়েও শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়নি মালিকপক্ষ। এতে শ্রমিকদের ক্ষোভ আরও বাড়ে। এ ছাড়া যেসব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে তাদের মধ্যে বেশি ভাগ কারখানায় গত মাসের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
শ্রমিকরা বলেন, গতকাল বুধবার থেকে কিছু কারখানায় অনিদিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়। একই সাথে কিছু কারখানায় শ্রমিকরা সকালে কাজে যোগ দিয়ে উৎপাদন শুরু করলেও কিছু সময় পরে আবার সাধারণ ছুটি দিয়ে দিয়েছে। আজও অনেকে কারখানায় এসে দেখেন কারখানার গেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ। আবার কিছু কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে বলে জানান শ্রমিকরা ।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, আশুলিয়ায় ৮৬টি কারখানা অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও ১৩৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। তবে, কোথাও বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
বিজিএমইএর সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলে, নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও পরিস্থিতির কোন উন্নতি হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা অনুমান করা কঠিন।