ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় যেমন ছিলেন আসামিরা
ঘড়ির কাঁটায় সকাল ১০টা। এমন সময় আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সাবেক মন্ত্রী, সচিবসহ ১৩ আসামিকে। আরও একজনকে হাজির করার কথা ছিল। নাম আব্দুর রাজ্জাক। অন্য মামলায় রিমান্ডে থাকায় তাকে হাজির করা হয়নি।
আসামিদের মধ্যে ডা. দীপু মনিকে কাশিমপুর কারাগার, অপর ১২জনকে কেরানীগঞ্জ থেকে হাজির করা হয়। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্য দিয়ে প্রিজনভ্যান থেকে তাদের নামানো হয় একে একে। এ সময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে দীপু মনি নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেন।
আদালতের হেফাজত খানায় নিয়ে যাওয়া হয় সব আসামিকে। বেলা ১০টা ২০ মিনিটে এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন সাংবাদিকরা। এ সময় হেফাজত খানায় আনিসুল হক, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সালমান এফ রহমান খোশ গল্প করতে দেখা যায়। অন্য আসামিদের কেউ কথা বলছিলেন, ঝিমাচ্ছিলেন।
পরে সাড়ে ১০টা তাদের বিচারকক্ষের প্রবেশ করানো হয়। সেখানে আসামিদের জন্য নির্ধারিত কাঠা গড়ায় দুটি সারিতে বসানো হয়। প্রথম সারিতে আনিসুল হক সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা পরা। তার পাশেই টিশার্ট পরা তৌফিক এলাহী ছিলেন। রাশেদ খান মেনন পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে ও কর্নেল ফারুক খান ও কামাল আহমেদ মজুমদার শার্ট-প্যান্ট পরে চেয়ারে বসা ছিলেন।
দ্বিতীয় সারিতে সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক পাঞ্জাবি-প্যান্ট গরম সুয়েটার গায়ে স্যান্ডেল পরা ছিলেন। হাসানুল হক ইনুও পাঞ্জাবি-পায়জামা ও সুয়েটার পরে ছিলেন। এ ছাড়া জুনাইদ মাহমুদ পলক শার্ট প্যান্ট পরা অবস্থায় অনেকটা নার্ভাস হয়ে চুপচাপ বসে ছিলেন। ডা. দীপু মনিকে কাঠ গড়ার পাশে চেয়ারে পৃথকভাবে বসানো হয়।
বেলা ১১টা মামলার শুনানি শুরু হলে আসামিরা সবাই দাঁড়িয়ে যান। এ সময় প্রসিকিউটর সাড়ে পনের বছরে শেখ হাসিনার অপরাধ পড়ে শোনান। সহযোগী আসামি হিসেবে প্রত্যেকের অপরাধ শুনানোর সময় আনিসুল হক পাশে বসা ডা. দীপু মনির দিকে তাকিয়ে অনেকটা ভেঙচি কেটে হতাশা প্রকাশ করেন। তবে, চুপচাপ চোখ বন্ধ করে গুমাচ্ছিলেন সালমান এফ রহমান। শাহজাহান খান চোখ বন্ধ করে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকেন। কামাল আহমেদ মজুমদার বার বার দাঁড়িয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। তবে, আদালত তাতে ভ্রুক্ষেপ করেনি।
দীপু মনি শাড়ি পরে এসেছিলেন। হতাশা ছুঁয়ে ছিল তার মুখজুড়ে। থুতনিতে হাত দিয়ে বসেছিলেন।
শামসুদ্দিন চৌধুরীর অপরাধ যখন আদালতে পড়া হচ্ছিল, তখন তিনি চোখ বড় বড় করে এদিকে ওদিকে তাকাচ্ছিলেন। তবে, কোনো কথা না বলে বসেছিলেন।
শুনানি শেষ পর্যন্ত তারা কাঠগড়ায় বসে ছিলেন। পরে তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয় এবং কেউ কেউ পরিবার থেকে পাঠানো খাবার খান।
দুপুর দেড়টার দিকে তাদের প্রিজনভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।