চাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ
ব্যাটিং ইনিংসটা দুর্দান্ত কেটেছে বাংলাদেশের। জাকের আলির ব্যাটিং ঝড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৯০ রানের কঠিন লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও দারুণ শুরু বাংলাদেশের। রান তাড়া করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডারদের কাঁপিয়ে দিয়ে বোলিং ইনিংস শুরু করেছে লিটন দাসের দল।
১৯০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর দলীয় সাত রানে হারায় আরেক উইকেট। এর মধ্যে প্রথমে ব্রেন্ডন কিংকে ফেরান তাসকিন। আর মেহেদি আউট করেন জাস্টিন গ্রিভসকে।
জোড়া উইকেট হারানোর পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন জনসন চার্লস ও নিকোলাস পুরান। দুজনকেই বিদায় করেন বাংলাদেশি বোলাররা। দলীয় রান ৪৫ থেকে ৪৬ যেতেই তারা হারায় আরো তিনটি উইকেট। পঞ্চাশ রানের নিছে ৫টি উইকেট হারিয়ে বিপাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৮৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭২ রান করেন জাকের আলি অনিক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেছেন দীর্ঘদিন পর একাদশে ফেরা পারভেজ হোসেন ইমন।
এর আগের দুই ম্যাচের দুটিতে জিতে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। এই পরিসংখ্যানটা ৩-০ করে নেবার মিশনে শেষ ম্যাচেও ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। কারণ, আগের দুই ম্যাচেও আগে ব্যাটিং নিয়ে সাফল্য এসেছিল বাংলাদেশের। আজও একই পথে হাঁটলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস।
কিংসটাউনের আর্নোস ভেল স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গে শেষ টি-টোয়েন্টিতে শুরুটা করেন পারভেজ হোসেন ইমন। দীর্ঘদিন পর ফেরার চাপকে পেছনে ফেলে শুরুর ভিতটা গড়ে দেন পারভেজ। তবে দলীয় ৪৪ রান পার হলে দুজনেই ফিরে যান সাঝঘরে। প্রথমে ফেরেন টানা ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা লিটন। রোমারিও শেফার্ডের বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন লিটন (১৪)। এরপর দলীয় ৫৪ রানে বিদায় নেন পারভেজ। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে আলজারি জোসেফের বলে ফ্লিক করে ছক্কা মারতে গিয়ে সিলসের হাতে ধরা পড়েন এই ওপেনার। দুই ছক্কা আর চার বাউন্ডারিতে ২১ বলে ৩৯ রান করে থামে তার ইনিংস।
এরপর বাংলাদেশ হারায় তানজিদ তামিমকে। ইনিংসের অষ্টম ওভারে মোতিকে ছক্কা মেরে দারুণ শুরু ক করে ওই ওভারেই ৯ রানে ফেরেন তিনি। তানজিদ ফেরার ধাক্কা মিরাজের ব্যাটে কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। তিনিই বাংলাদেশকে ১০০'র ঘর পার করান। কিন্তু দলীয় শতরান পার হবার পর টিকেনি তার ইনিংস। ব্যক্তিগত ২৯ রানে রস্টন চেজের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন মিরাজ।
বাংলাদেশের পরের উইকেটটি যায় চরম নাটকীয় রান আউটে। চেজের বলেও সাড়া না দিয়ে রান নিতে ছুটেন জাকের হোসেন। পরে জাকের শামিমের প্রান্তে এলে মনে হয় জাকের আউট। তবে না, এখানেও নাটকীয়তা। আম্পায়ার রিপ্লেতে দেখেন, শামীমের আগেই জাকের ক্রিজে ব্যাট রেখেছেন। ফলে জাকের নয় সাজঘরে ফেরেন শামীম। অবশ্য জাকের থাকায় মন্দ হয়নি বাংলাদেশের। শেষ দিকে টেলএন্ডারদের নিয়ে তিনিই গড়ে দেন বাংলাদেশের ভিত। তার ব্যাটে চড়েই এই সিরিজের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা জাকের ৩৬ বলে চার হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। শেষ পর্যন্ত ৪১ বলে ৭২ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। যা সাজানো ছিল ৬টি ছক্কা ও তিনটি চারে।