গ্রীষ্মের ছুটিতে বাড়ি যাওয়া হলো না ২ ভাইয়ের
বিদ্যালয়ে শুরু হয় গ্রীষ্মের ছুটি। সেই ছুটি কাটাতে স্কুলপড়ুয়া ছোট ভাইকে মোটরসাইকেলে বসিয়ে বাড়ি রওনা হন বড় ভাই। কিন্তু চিরদিনের ছুটিতে চলে গেছেন দুই ভাই।
বাড়ি যাওয়ার পথে আজ শুক্রবার গাজীপুরে বিআরটিসির দোতলা বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুই ভাই নিহত হয়েছে। উত্তেজিত এলাকাবাসী ওই বাসে অগ্নিসংযোগ করে এবং প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে।
নিহত ব্যক্তিরা হলো নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কলসহাটি গ্রামের মাহিতুল কবির নিউগির ছেলে ইকবাল হোসেন (১৯) ও তার ছোট ভাই ইশরার হোসেন (১০)।
ইকবাল ঢাকার দক্ষিণখান আটিপাড়া এলাকার মোটর মেকানিক এবং ছোট ভাই ইশরার স্থানীয় একটি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
গাজীপুরের নাওজোড় হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপপরিদর্শক (এসআই) বাহার আলম ও এলাকাবাসী জানান, রাজধানীর ঢাকার দক্ষিণখান আটিপাড়া এলাকার মোটর মেকানিক বড় ভাই ইকবালের সঙ্গে থাকত তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ইশরার। বিদ্যালয়ের গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতে শুক্রবার দক্ষিণখান এলাকা থেকে ছোট ভাই ইশরারকে সঙ্গে নিয়ে ইকবাল মোটরসাইকেলে চড়ে নেত্রকোনায় গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। পথে বেলা ১২টার দিকে তারা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া এলাকার বর্ষা সিনেমা হলের সামনে পৌঁছালে জয়দেবপুরগামী বিআরটিসির যাত্রীবাহী একটি দোতলা বাস পেছন থেকে ওই মোটরসাইকেলকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ডিভাইডারের সঙ্গে চাপা দেয়। এ সময় দুই আরোহীসহ মোটরসাইকেলটি সড়কে ছিটকে পড়ে এবং বাসের চাকায় পিষ্ট হয়। এতে মোটরসাইকেল আরোহী শিশু ইশরার ঘটনাস্থলেই নিহত ও ইকবাল গুরুতর আহত হন। এলাকাবাসী হতাহতদের উদ্ধার করে। পরে ইকবালকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকেও মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে বাসে অগ্নিসংযোগ করে এবং ওই মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় তারা কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাসের আগুন নেভায়। পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়ে ও দুর্ঘটনাস্থল থেকে গাড়ি দুটি সরিয়ে নিলে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর ওই মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ওই দুজনকে মৃত অবস্থায় বেলা সোয়া ১২টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়।