‘সামনে ভিআইপি উড, কাইত হওয়ার সম্ভাবনা আছে’
শেরপুরের শ্রীবরদী পৌরসভা শহরে ঢুকতেই চৌরাস্তায় শহীদ মিনারের সামনে গেলেই চোখে পড়বে বিরাট একটি সাইন বোর্ড।
সেখানে লেখা রয়েছে বেশ কিছু সাবধান বাণী। সাইনবোর্ডের ওপরে লেখা, ‘সামনে ভিআইপি উড, সামনে গাতা, সামনে পুশকুনি, সামনে পেক, সামনে ভেদর, সামনে সরম, সামনে লইজ্জে।’
এরপর নিচে লেখা, ‘সামনে উষ্ঠে খাওয়ার সম্ভাবনা আছে, সামনে কাইত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সামনে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। সুতরাং সাবধানে পথ চলুন।’
আর এসব আহ্বান জানানো হয়েছে জলেভাসা রোডবাসীর পক্ষে।
শ্রীবরদী পৌরসভার রাস্তার হালহকিকত নিয়ে ‘শ্রীবরদী লোকাল বয়েজ’ নামের একটি সংগঠন রাস্তা সম্পর্কে পথচারীদের সতর্ক করতে এবং কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এমন একটি ব্যাঙ্গাত্মক বোর্ড টানিয়েছে।
শহরে ঢুকতেই চৌরাস্তার মোড়ে শহীদ মিনারের সামনে টানানো এই সাইনবোর্ডটি সবার চোখেই পড়ে।
তবে লোকাল বয়েজ সংগঠনটির অভিযোগ, সাইনবোর্ডটি চোখে পড়াতেও লাভ হয়নি কিছুই। বরং পৌরসভা আর স্থানীয় সরকারের টানাটানিতে আটকে আছে রাস্তাটি সংস্কারের কাজ।
যে সড়ক নিয়ে এই সাইনবোর্ড সেটি শ্রীবরদী পৌর শহরের প্রধান সড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন উপজেলা পরিষদ কার্যালয়, টাউন হল এবং মূল শহরে চলাচল করতে হয়।
অথচ সড়কটিতে এখন সবসময় থাকে হাটু পানি। পানিতে ঢাকা খানাখন্দ পেরিয়ে হেঁটে বা রিকশায় সুস্থভাবে গন্তব্যে পৌঁছানো খুবই কঠিন। প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে।
শ্রীবরদী লোকাল বয়েজের সমন্বয়কারী এ জে রোমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা অনেক দিন থেকেই শ্রীবরদী পৌর শহরের রাস্তা সংস্কারের কথা বলে আসছি। আমরা কথা বলেছি পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে, কথা বলেছি স্থানীয় সরকার তথা এলজিআরডির থানা প্রকৌশলীর সাথেও। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং পৌরসভা বলেছে এটি এলজিআরডি ঠিক করবে আবার এলজিআরডি বলেছে এটা পৌরসভার রাস্তা।’
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা পরিষদের থানা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাস্তাটি মূলত পৌরসভার কিন্তু আমরা এর আগে রাস্তাটির সংস্কারের কাজ করেছি। এবারও কাজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্ষার জন্য কাজ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ রাস্তার পাশে কোনো ড্রেন তৈরি না করায় পানি নিষ্কাশনও হচ্ছে না। যার ফলে রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াতে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
শুধু একটি রাস্তা নয় শ্রীবরদী-নিলক্ষিয়া সড়ক, শ্রীবরদী-কর্ণঝোড়া সড়ক, দহেরপাড় সড়কসহ অনেক রাস্তারই বেহাল অবস্থা। যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে এসব রাস্তায়, এমনকি কোনো কোনো রাস্তায় হেঁটে চলাও সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিক ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফেরদৌস আলী বলেন, ‘এই সড়কগুলো সংস্কার না হওয়ায় মানুষের চলাচলের অসুবিধা হচ্ছে। আমরা উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি এসব ব্যাপারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা সংস্কারকাজ শুরু করেনি।’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য শ্রীবরদী পৌরসভার মেয়র আবু সাঈদ চানের মোবাইলে ফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইল ফোনে পাওয়া গেছে শ্রীবরদী পৌরসভার প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান বাবুকে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘উপজেলার সামনের রাস্তাটি এলজিআরডির পৌরসভার নয়।’ তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত পৌর পরিষদের মিটিংয়ের পর জানাতে পারবেন বলে প্যানেল মেয়র জানান।