শর্তে সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দেওয়ার নির্দেশ
শর্ত সাপেক্ষে বেসরকারি মুঠোফোন অপারেটর সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সিটিসেল কর্তৃপক্ষকে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল করতে পারবে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন—বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।
আদালত বিটিআরসির পাওনা ৪৭৭ কোটি থেকে ৮০ কোটি টাকা কমানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে সিটিসেল ও বিটিআরসির মধ্যে বিষয়টি মীমাংসার জন্য ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি করে দেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ আদেশের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছিলেন।
আজ আদালতে সিটিসেলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ও এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাকিব।
পাওনা টাকা না দেওয়ায় ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বিটিআরসি। এ সিদ্ধান্ত স্থগিত চেয়ে ২৪ অক্টোবর চেম্বার কোর্টে আবেদন করে সিটিসেল কর্তৃপক্ষ।
পরে ২৫ অক্টোবর প্রাথমিক শুনানি শেষে ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন চেম্বার আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ আগস্ট এক মাসের শোকজ দিয়ে সিটিসেলকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। পৌনে ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব বকেয়া থাকা সিটিসেল গ্রাহকদের প্রথমে ১৬ আগস্ট ও পরে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত বিকল্প সেবা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। ২৩ আগস্ট সিটিসেলের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, অর্থাৎ অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে সিটিসেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২২ আগস্ট বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের হাইকোর্টের একক বেঞ্চ বিটিআরসির পক্ষ থেকে সিটিসেলকে দেওয়া শোকজ নোটিশের সময় পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে বিটিআরসি।
গত ২৯ আগস্ট আপিল বিভাগ বিটিআরসির পাওনা পরিশোধে সিটিসেলকে দুই মাস সময় দেয়। এর মধ্যে প্রথম মাসে তিন ভাগের দুই ভাগ ও দ্বিতীয় মাসে বাকি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।