ইন্টার্নদের ধর্মঘট সমর্থনযোগ্য নয় : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সারা দেশে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট পালন সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এই সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ডায়ালাইসিস সেন্টার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বিচ্ছিন্নভাবে কেউ যদি প্রতিবাদ করে সেটা করা ঠিক নয়। রোগীকে জিম্মি করে কেউ ধর্মঘট করুক সে ডাক্তার হোক, শ্রমিক হোক, যেই হোক না কেন এটা আমরা সমর্থন করি না। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ব্যবস্থা চলবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার ১৫ হাজার টাকা করে ইন্টার্ন চিকিৎসকের বেতন বাড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের চলা আন্দোলন অত্যন্ত দুঃখজনক। দোষী রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রোগীদের জিম্মি করে ধর্মঘট আহ্বানকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর আওতায় কিডনি ডায়ালাইসিস রোগীদের জন্য সম্পূর্ণ নতুনভাবে ৩১টি যন্ত্র স্থাপন করে এ ওয়ার্ডটি চালু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. মুজিবুল হক উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফ্যানের সুইচ বন্ধ করতে বলায় এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের বাকবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে অন্য ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মুমূর্ষু রোগীর সামনেই স্বজনদের মারপিট ও কান ধরে ওঠ-বস করান। এরপর রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে হাসপাতালের গেট আটকে সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেন।
২১ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা ওই রোগী মারা যান।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২ মার্চ চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের পেশাগত সনদের কার্যকারিতা ছয় মাস স্থগিত করে মন্ত্রণালয়। তাঁরা হলেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি এম এ আল মামুন, সহসভাপতি আশিকুজ্জামান আসিফ, সাবেক সহসভাপতি কুতুবউদ্দিন ও নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজ।
মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশে উল্লেখ করা হয়, নূরজাহানকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, আশিকুজ্জামানকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, কুতুবউদ্দিনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মামুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপের বাকি অংশ সম্পন্ন করতে হবে। ভবিষ্যতে একই ধরনের অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হলে তাঁদের পেশাগত সনদ বাতিল করা হবে বলেও নির্দেশে উল্লেখ করা হয়।
ওই চারজনের স্থগিতাদেশ ও বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সারা দেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আজ শনিবার সকাল থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।