সাফাতের গাড়িচালক বিল্লালের জবানবন্দি
রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামি সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ রোববার ঢাকার মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসানের আদালতে বিল্লাল জবানবন্দি দেন।
এর আগে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে বিল্লালকে হাজির করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিদর্শক ইসমত আরা অ্যানি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসানের আদালতে বিল্লালের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়ে বলেন, জবানবন্দির পর বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজধানীর নবাবপুর রোডের ইব্রাহিম হোটেল থেকে বিল্লালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৮ মার্চ বনানীর হোটেল রেইনট্রিতে ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন দুই ছাত্রী। পরে ৬ মে বনানী থানায় মামলা করেন ওই দুই ছাত্রীর একজন। মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
গত ১১ মে সিলেটে গ্রেপ্তার হন মামলার আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফ। এর পরে তাদের রিমান্ডে পাঠানো হয়। তাঁরা আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তাঁর বান্ধবী ও বন্ধু শাহরিয়ারকে আটক রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে জোর করে ঘরে নিয়ে যান আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ একাধিকবার এবং বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
আসামি সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তাঁর মাধ্যমেই ঘটনার ১০-১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই ছাত্রীর পরিচয় হয়।
এজাহারে আরো বলা হয়, ঘটনার দিন সাফাতের জন্মদিনে দুই ছাত্রী যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তাঁর বান্ধবী জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে। সেখানে যাওয়ার পর তাঁরা ভদ্র কোনো লোককে দেখেননি। সেখানে আরো দুই তরুণী ছিলেন।
বাদী ও বান্ধবী দেখেন সাফাত ও নাঈম ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তাঁরা চলে যেতে চান। পরে আসামিরা তাঁদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেন। তাঁকে খুব মারধর করেন।
ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালককে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে বলেন। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন এবং তিনি প্রতিবাদ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এর পর বাদী ও বান্ধবীর বাসায় দেহরক্ষী পাঠানো হয় তথ্য সংগ্রহের জন্য। তাঁরা এতে ভয় পেয়ে যান। পরে লোকলজ্জার ভয় এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। এতে মামলা করতে বিলম্ব হয়।