গুমের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি
গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পেতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কলামলেখক ও কবি ফরহাদ মজহার। এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আজ শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন ফরহাদ মাজহার।
ফরহাদ মাজহার বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে অত্যন্ত কাতরভাবে বলব, তিনি অবশ্যই সুয়োমোটো (স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদেশ) করতে পারেন। যাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে, পোশাক পরে অথবা পোশাক ছাড়া। তাঁদের পরিবার যে অভিযোগ করেছে, তার সম্পর্কে একটা বিচার বিভাগীয় কমিটি তিনি করেন।’
জনগণতান্ত্রিক আন্দোলন আয়োজিত ‘গুম একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ’ শীর্ষক সেমিনারে জানানো হয়, গত পাঁচ বছরে ২৭৪ জন গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৫ জনের লাশ পাওয়া গেছে। আর ১৫৯ জনের অধিকাংশ বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন। বাকি ৮০ জনের এখনো কোনো খোঁজ নেই। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের স্বাক্ষর ও অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে সংঘটিত এই অপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে চাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ভিন্নমত দমন করতে হলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে হবে। গুম হচ্ছে সর্বনিকৃষ্ট পন্থা, সেই পন্থাটা বাংলাদেশে এখন রোজকার ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র তো গেছেই, তার সঙ্গে স্বাধীনতা। বাংলাদেশে স্বাধীনতা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারলেই আমরা গুমের সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পেতে পারি। তার জন্য আমাদের বিপ্লব দরকার।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠনের (সাদা দল) আহ্বায়ক ড. আক্তার হোসেন খান বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে যে ট্রাইব্যুনাল, এ ট্রাইব্যুনাল চলমান থাকবে। আগামী বছর হোক, দুই বছর পরেই হোক বা ২০ বছর পরেই হোক, আজকে যাঁরা গুম হচ্ছেন, যাঁরা গুম করছেন, তাঁদের বিচার একদিন হবেই।’
সেমিনারে বক্তারা আরো বলেন, গুম-খুনের শিকার বেশির ভাগই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের। কেউ অপরাধী হলে তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। গুম-খুনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের সমতুল্য হিসেবেও আখ্যায়িত করেন তাঁরা।