রোববার থেকে সারা দেশে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা সব সোনা-হীরা ফেরত ও স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। নইলে আগামী ১১ জুন রোববার থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছে তারা। একই সঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মইনুল খানের অপসারণের দাবি জানিয়েছে।
আজ বুধবার বেলা পৌনে ৩টায় রাজধানীর বাইতুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন সমিতির সহসভাপতি মো. এনামুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপন জুয়েলার্সের সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে তা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।
মো. এনামুল হক বলেন, আপন জুয়েলার্স ৪০ বছর ধরে তিল তিল করে একটি সফল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছে। শুধু বনানীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপন জুয়েলার্স ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনার জের ধরে বাংলাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এ কারণে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
জুয়েলার্স সমিতির সহসভাপতি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ ও হীরা ফেরত দিতে হবে এবং স্বর্ণ আমদানি ও ব্যবসার নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক জানান, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে আগামী রোববার থেকে সারা দেশে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করবেন। ১২ জুন স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এ ছাড়া ১৫ জুন ঢাকায় সারা দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের নিয়ে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
এনামুল হক আরো বলেন, বাংলাদেশে স্বর্ণের ওপর ১৫ শতাংশ কর বসানো হয়েছে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে তা মাত্র ১ শতাংশ। এই কারণে ক্রেতারা পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে স্বর্ণ কেনার প্রতি ঝুঁকছেন।
জুয়েলার্স সমিতির এই নেতা বলেন, সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আপন জুয়েলার্সের স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে। আপন জুয়েলার্সের জব্দ করা স্বর্ণের পক্ষে যেসব কাগজপত্র শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর চেয়েছিল তা জমা দেওয়া হলেও প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মইনুল খান তা মানেননি। আপন জুয়েলার্সের সঙ্গে শত শত কর্মী যুক্ত ছিলেন। তাঁরা এখন বেকার হয়ে পড়েছেন।
একই সঙ্গে স্বর্ণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সারা দেশে ১৮ লাখ স্বর্ণশিল্পী পরিবার হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানান এনামুল হক।