রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ‘অসত্য তথ্য দিচ্ছে’ সরকার
বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে সরকার অসত্য তথ্য দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ।
আজ সোমবার সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন তেল গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির এ সদস্য সচিব।
আনু মুহাম্মদ আরো বলেন, ‘এটাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করার বা অন্যভাবে ব্যাখ্যা করার কিছু নাই। কথাটা খুবই পরিষ্কার যে, সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর কোনো ধরনের বৃহৎ শিল্প স্থাপনা বা বাণিজ্যিক স্থাপনা সেগুলো করা যাবে না। এখন সরকার যদি বলে যে, না, এটা যেহেতু চলছে, সুতরাং এটা এর মধ্যে পড়বে না। এই কথাটাও নাকচ হয়ে যায়, ইউনেসকোর আরেকটা সিদ্ধান্তে; যেখানে বলা আছে, রামপাল নিয়ে যে মনিটরিং মিশন এসেছিল, সেই মনিটরিং মিশনের যে সিদ্ধান্ত সেটা পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই মনিটরিং মিশনের সিদ্ধান্তটা ছিল পরিষ্কার যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের জন্য খুবই ক্ষতিকর, সেহেতু এটা বন্ধ করতে হবে অথবা এটা এখান থেকে সরাতে হবে।’
৪১তম অধিবেশনের পর গতকাল রোববার রাতে সুন্দরবন নিয়ে পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেছে ইউনেস্কো। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী দাবি করছেন, ওই পর্যবেক্ষণে সুন্দরবনের কাছাকাছি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম চালাতে কোনো বাধা নেই।
জুলাইয়ের ২ তারিখ থেকে শুরু হয়ে ১০ দিন চলে ইউনেসকোর এ বছরের অধিবেশন। অধিবেশন শেষ হওয়ার ১৮ দিন পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে রোববার রাতে। যেখানে তাদের তালিকায় থাকা বিশ্ব ঐতিহ্যগুলো নিয়ে মতামত তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে আছে সুন্দরবনের কথা। এ বিষয়ে ১১ দফা সিদ্ধান্ত দিয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সংস্থা। যার চার নম্বরে উল্লেখ আছে, ২০১৮-এর ডিসেম্বরের মধ্যে যে কৌশলগত পরিবেশ প্রভাব সমীক্ষা জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তার আগ পর্যন্ত সুন্দরবনের পাশে কোনো বড় অবকাঠামো নির্মাণ না করা। আবার ২০১৬ সালে ইউনেসকোর প্রতিনিধিদল যে সুপারিশ তুলে ধরেছিল, তা পুরোপুরি বাস্তবায়নেরও অনুরোধ করেছে সংস্থাটি। যেখানে রামপাল প্রকল্পের কাজ বাতিলের সুপারিশ ছিল।
রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা আন্দোলন করে আসছেন, তাদের অভিযোগ সরকার সঠিক তথ্য তুলে ধরছে না। ইউনেসকোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর এখন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কাজ বাতিল করলে সরকার তো বটেই দেশেরও লাভ হবে বলেও দাবি তাদের।