‘ডন ভাই’কে খোঁজা হচ্ছে : র্যাব
রাজধানীর দারুস সালাম এলাকায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানের সময় জানতে পারা ‘ডন ভাই’ হিসেবে পরিচিত একজনকে খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছে র্যাব। ‘ডন ভাই’ সম্পর্কে জীবিতাবস্থায় বলেছিলেন ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহ, যিনি আরো ছয়জনকে সঙ্গে নিয়ে আত্মঘাতী হন বলে জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ‘জঙ্গি আস্তানার’ পাশে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানান র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
মুফতি মাহমুদ জানান, জঙ্গি আস্তানায় আজকের মতো অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে। আবদুল্লাহর একটি ফ্ল্যাটে ২৩টি ফ্রিজ রয়েছে। এই ফ্রিজগুলোর মধ্যে বোমা বা অন্য বিস্ফোরক আছে কি না তা আগামীকাল খুঁজে দেখা হবে। এখন পর্যন্ত ওই ‘জঙ্গি আস্তানা’ থেকে ১০টি বড় আকারের বোমা পাওয়া গেছে। সেখান থেকে বোমাসদৃশ ৩০টি বোতল পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ৫০টি ধারালো দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেছে। ১০ কেজি গানপাউডার ও সালফারসহ বোমা তৈরির অন্যান্য দ্রব্যও পাওয়া গেছে।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আরো জানান, মিরপুরের ওই ফ্ল্যাট থেকে একটি বহুতল ভবনের নকশা পাওয়া গেছে। যেটি কোনোভাবেই ফ্ল্যাটে থাকার কথা ছিল না। তাই ধারণা করা হচ্ছে, কোনো বড় ভবনে নাশকতার জন্যই এই নকশা তৈরি করা হয়েছিল। এ ছাড়া ওই জঙ্গি আস্তানায় পাঁচ-ছয়জন কর্মচারী ছিল। তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য খোঁজ করা হচ্ছে। আর আবদুল্লাহর কাছ থেকে ‘ডন ভাই’ নামের এক ব্যক্তির নাম জানা গেছে। তাঁর সন্ধান চলছে।
মুফতি মাহমুদ জানান, অভিযানের শুরুতে ওই ভবনের ছয়তলার ফ্ল্যাটটি লক (তালাবদ্ধ) করে দেওয়া হয়েছিল। সে কারণে ছয়তলার বোমা ও আইইডি যা ছিল, সেগুলো সেভাবেই মজুদ রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে, সবগুলো বোমা সূক্ষ্মভাবে তৈরি করে প্যাকেট করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামীকালের মধ্যেই বাসাটি বিস্ফোরকমুক্ত ও পরিষ্কার করা হবে।
বোমাগুলো ওই বাসায় তৈরি না অন্য কোথাও-এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, বোমাগুলো ওই বাসাতেই তৈরি করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গার মসন্দি এলাকার একটি বাড়ি থেকে গত সোমবার রাতে জঙ্গি সন্দেহে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ‘ফলোআপ’ হিসেবে মিরপুরে ‘কমলপ্রভা’ নামের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। বাড়িটির মালিক টিঅ্যান্ডটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ।
গত মঙ্গলবার দিনভর আবদুল্লাহকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। দুপুরে ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহর বোন মেহেরুন্নেসা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে র্যাব। এ সময় ওই বাড়ির ২৩টি ফ্ল্যাট থেকে ৬৫ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহ আত্মসমর্পণে রাজিও হন।
পরে রাতে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, ‘জঙ্গিরা আত্মসমর্পণ না করে নিজেরাই ওই ভবনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে চার র্যাব সদস্য আহত হন।’