মিথ্যা অপবাদ দিয়ে শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর
অসামাজিক কাজের অভিযোগ এনে লক্ষ্মীপুরের এক ১০ বছর বয়সী শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার মান্দারী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটির নাম সোহেল মিয়া। সে স্থানীয় একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে। সোহেল সদরের কুশাখালী ইউনিয়নের হাজীগঞ্জ গ্রামের শহিদুল হোসেনের ছেলে।
আহত সোহেল সাংবাদিকদেরজ জানায়, স্থানীয় মান্দারী বাজারে বাবুল ভ্যারাইটি স্টোর নামে একটি চায়ের দোকানে কাজ করে সে। সকাল ১০টার দিকে বাবুলের বাড়ি থেকে দোকানের উদ্দেশে হেঁটে আসছিল সে। পথে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে সুপারি বাগানের ভেতরে ঢোকে। কাজ সেরে বের হয়ে আসার সময় স্থানীয় বাসিন্দা জবি উল্লাহ পাটোয়ারি ও কালু পাটোয়ারি তাকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে।
স্থানীয়রা জানান, জবি ও কালু পাটোয়ারির দাবি, সোহেল তাঁদের গরুর সঙ্গে অসামাজিক কাজ করেছে। সেই কারণেই তাঁরা তাঁকে পেটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এভাবে সোহেলকে কয়েকঘণ্টা বেঁধে রেখে লাঠি ও ঝাড়ু দিয়ে পেটানো হয়। এ সময় বার বার সোহেলের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিও আদায়ের চেষ্টা করা হয়।
পুরো ঘটনাটি গোপনে ভিডিও করেন স্থানীয় এক যুবক।
খবর পেয়ে সোহেলের দোকান মালিক বাবুল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। এ সময় জবি ও কালু জরিমানা বাবদ বাবুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন।
পরে বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
এদিকে আজ বুধবার দুপুরে পুলিশ আহত সোহেলকে মান্দারী বাজারে কর্মরত চা দোকান থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোক্তার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে মামলা করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত জবি উল্লা পাটোয়ারী ও কালু পাটোয়ারী আত্মগোপনে রয়েছে। ফলে ঘটনার পর প্রায় দুই দিন পার হয়ে গেলেও এখনো তাদের আটক করতে পারেনি পুলিশ।
সোহেল বলে, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে মারধর করা হয়েছে। জবি ও কালু পাটোয়ারির হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেও সে রক্ষা পায়নি। এখন এই ঘটনার বিচার চায় সে।