দেশে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা চলছে : খন্দকার মোশাররফ
দেশে আজ অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে ভালো অবস্থানে আসতে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং তাঁর নেতৃত্বে গণআন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে। তাই সবাইকে সেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির শীর্ষ এই নেতা এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে একটি শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা চলছে। গণতন্ত্র আওয়ামী লীগের বাক্সবন্দি রয়েছে। যারা ব্যাংক লুট করে, গণতন্ত্র লুট করে, দেশের অর্থনীতি আজ তাদের হাতে। তাই শেয়ারবাজারের আজ করুণ অবস্থা।
‘দেশের জনগণ নিজেদের কোনোভাবে নিরাপদ মনে করে না। কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন- আমাদের এক ছোট বোনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া দেশে পুনরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না। তাই এখন আমাদের প্রধান কাজ খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং তাঁর নেতৃত্বে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা।’
খন্দকার মোশাররফ আরো বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে সরকার রাজনৈতিকভাবে কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। তাঁকে যে ধরনের মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি এই মামলার জামিন যোগ্য। কিন্তু সরকার সেই জামিনকে দীর্ঘায়িত করে তাঁকে দেড় বছর ধরে কারাগারে আটক করে রেখেছে। কেন রেখেছে? এজন্য রেখেছে যে, বর্তমান সরকার ২০১৪ সালে বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসেছিল। এবারও বিনা ভোটে ক্ষমতায় এসেছে।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। তাঁর দল বিএনপিকে ভয় পায়। এই জন্যই খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। তাঁর কোনো দোষ ছিল না। এখনো দোষ নেই। একটি কারণে তাঁকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে তা হলো- তিনি দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তিনি দেশের যতগুলো আসনে যতবার নির্বাচন করেছে জনগণ তাঁকে নির্বাচিত করেছে। তিনি সবচেয়ে জনপ্রিয় বলেই তাঁর দোষ। তিনি দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করছেন— এটা তাঁর দোষ।
খালেদা জিয়া আপসহীন নেত্রী, তিনি আন্দোলনের মাধ্যমে এ দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আর শহীদ জিয়া বাকশালের হাত থেকে এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অতএব এ দেশে গণতন্ত্র হত্যা করার যে ইতিহাস তা হচ্ছে আওয়ামী লীগের। আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাস বিএনপির এবং এই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একমাত্র শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়ার নাম এসে যায়। যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে ভয় পায় সেই জন্য খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুঁদা, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিয়া মো. আনোয়ার, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ বক্তব্য দেন।