ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ জুয়েলের পরিবারে উৎকণ্ঠা
সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ মৌলভীবাজারের জুয়েল আহমদের (২৩) সন্ধানে চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে তাঁর পরিবার। জুয়েলের খোঁজ না পেয়ে পরিবারটিতে চলছে শোকের মাতম।
বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ছাতারখাই গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে জুয়েল। গত ৯ মে নৌকাডুবির পরদিন জামাল উদ্দিন জানান, ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে যে নৌকাডুবি হয়েছে, সম্ভবত সেটিতে তাঁর ছেলে জুয়েলও ছিল। যাত্রার দুদিন আগে জুয়েল ফোনে পরিবারকে জানান, খুব শিগগির তিনি নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশে রওনা দেবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নিখোঁজ বাংলাদেশিদের তালিকায়ও তাঁর নাম রয়েছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলেরে লিবিয়া থেকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে দালাল আড়াই লাখ টাকা নেয়। এর আগেও দালালরা অনেক টাকার বিনিময়ে জুয়েলকে লিবিয়া নেয়। কথা ছিল, সেখান থেকে তারে ইতালিতে পাঠানো হবে। কিন্তু পরের দেড় বছরেও ছেলেরে ইতালি পাঠাইতে পারে নাই।’
পরিবার জানায়, জুয়েলকে ইতালি পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৮ সালের ৫ মার্চ তাদের কাছে থেকে আট লাখ ২০ হাজার টাকা নেন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দালাল বদরুল ইসলাম। প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে জুয়েলকে লিবিয়া পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাঁকে ইতালি পাঠানো হবে বলা হলেও পরে ওই দালাল আর জুয়েলের পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। ওই অবস্থাতে লিবিয়াতেই জুয়েলের প্রায় দেড় বছর কেটে যায়।
পরবর্তী সময়ে সেখানকার এক বন্ধুর মাধ্যমে ইতালিতে বসবাসরত বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের আরেক দালাল পারভেজের সঙ্গে পরিচয় হয় জুয়েলের। পারভেজ আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে জুয়েলকে ইতালিতে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
চুক্তি অনুযায়ী, গত বছর ডিসেম্বরে পারভেজের বাবা রফিক উদ্দিনের হাতে নগদ আড়াই লাখ টাকা তুলে দেয় জুয়েলের পরিবার। সম্ভবত ডুবে যাওয়া ওই নৌকার আরোহী ছিলেন জুয়েল।
তিউনিসিয়ার উপকূলে ওই নৌকাডুবির ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত মৌলভীবাজারের তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ মৌলভীবাজারের জুয়েল আহমদের (২৩) সন্ধানে চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে তাঁর পরিবার। ছবি : সংগৃহীত