থানার বাসা থেকে এসআইয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
সিলেটের গোয়াইনঘাট থানা প্রাঙ্গণের বাসা থেকে আজ রোববার সুদীপ বড়ুয়া (৪৫) নামের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিলের দুর্ব্যবহার ও মানসিক হয়রানির কারণে সুদীপ গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর মেয়ে অভিযোগ করেছেন।
নিহত সুদীপ বড়ুয়া গোয়াইনঘাট থানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকার মৃত রবীন্দ্র লাল বড়ুয়ার ছেলে।
গোয়াইনঘাট থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন জানান, দুপুর ২টা পর্যন্ত থানায় ছিলেন সুদীপ বড়ুয়া। এরপর থানা এলাকায় নিজের বাসায় যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পর পাশের ঘরে থাকা এসআই জুনায়েদ সুদীপের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি আবদুল জলিল জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও নিশ্চিত নন, এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু।
সুদীপ বড়ুয়া প্রায় দুই যুগ ধরে পুলিশে চাকরি করছেন। চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি গোয়াইনঘাট থানায় যোগ দেন। তাঁর এক ছেলে নৌবাহিনীর স্কুলে ও এক মেয়ে মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছেন।
সুদীপের মেয়ে শতাব্দী বড়ুয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘বাবা প্রায়ই ফোন করে বলতেন, গোয়াইনঘাট থানার ওসি আবদুল জলিল তাঁর সঙ্গে শুধু শুধু দুর্ব্যবহার করেন এবং দিনরাত চাপের মধ্যে রাখেন। সর্বশেষ গতকালও বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি তখনও বলেছেন, এ থানায় তিনি আর থাকতে চান না। ওসির কারণেই আমার বাবা আত্মহত্যা করেছেন।’
অবশ্য এই অভিযোগে ব্যাপারে ওসি আবদুল জলিল কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এদিকে, এসআই সুদীপ বড়ুয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পরে সাংবাদিকদের কাছে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম বলেন, ‘সুদীপের আত্মহত্যার বিষয়ে তাঁর মেয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তাঁর নিজস্ব। তাঁরা যদি আইনি আশ্রয় গ্রহণ করেন, তবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, সুদীপের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হবে।