‘ফ্লাইং একাডেমির অবহেলায় তামান্নাকে হারিয়েছি’
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/05/04/photo-1430751745.jpg)
রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দরে প্রশিক্ষণরত পাইলট তামান্না রহমানের (২২) মৃত্যুর জন্য বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অবহেলাকে দায়ী করেছেন তাঁর বাবা ডা. আনিসুর রহমান।
তামান্নার বাবা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির পাহাড় সমান দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার জন্য আমি আজ আমার একমাত্র মেয়েকে হারালাম। ফ্লাইং একাডেমির নানা অব্যবস্থাপনার তথ্য ও প্রমাণাদি সংগ্রহ করা হয়েছে, খুব শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’
আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে তামান্নার পরিবার। এতে লিখিত বক্তব্য পড়েন তামান্নার মা রেহানা ইয়াসমিন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী ফ্লাইং একাডেমি এবং সিভিল অ্যাভিয়েশনসহ যেকোনো বিমানবন্দরের রানওয়েতে ২৪ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিস টিম, রেসকিউ টিম ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার কথা যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটনার দুই মিনিটের মধ্য ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু রাজশাহী বিমানবন্দরে যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন সেখানে কিছুই ছিল না। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলেও ২১ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এগিয়ে আসেন। ততক্ষণে আমার মেয়ে তামান্না পুড়ে কয়লা হয়ে যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি তিন দশকেরও বেশি পুরনো এয়ারক্রাফট এবং প্রায় ভাঙা প্লেন দিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়। এসব এয়ারক্রাফটের সিটবেল্ট নষ্ট, হুইল নষ্ট, ইঞ্জিন পুরেনো ক্ষয়ে যাওয়া। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমির প্রধান প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান কোনো ধরনের সার্টিফিকেট ছাড়াই দায়িত্ব পালন করছেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
তামান্নার বাবা সংবাদ সম্মেলনে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনার এক মাস পার হওয়ার পরও তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়ার সমালোচনা করেন। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) রাজশাহী বিভাগীয় সহসভাপতি ডা. তবিবুর রহমান শেখ, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হেদায়েতুল্লাহ, বিএমএ রাজশাহীর সভাপতি ডা. দীপক কুমার মোহন্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
গত ১ এপ্রিল দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দরে বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমি অ্যান্ড সিভিল অ্যাভিয়েশনের স্যাসনা-১৫২ প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রশিক্ষণার্থী তামান্না রহমান মারা যান। এ ঘটনায় বিমানে থাকা তামান্নার প্রশিক্ষক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাঈদ কামাল গুরুতর আহত হন। ঘটনার পর সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও সে কমিটির প্রতিবেদন এখনো আলোর মুখ দেখেনি।