‘রায় শুনেছেন, প্রতিক্রিয়াহীন সাকা চৌধুরী’
রেডিওতে মামলার রায় শুনেছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী। তবে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া জানাননি তিনি।
আজ বুধবার দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের ১ নম্বর জেলের সুপার সুব্রত কুমার বালা এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সুব্রত বলেন, ‘১ নম্বর জেলের ৩০ নম্বর নির্জন সেলে বসে রেডিওতে মামলার রায় শুনেছেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।’ তিনি বলেন, ‘মামলার রায় ঘোষণার পর আজ সকাল ১০টার দিকে তাঁর কাছে গিয়ে কুশলাদি জিজ্ঞেস করলে তিনি ভালো আছেন বলে জানান। পরে রায়ের কথা জানানো হলে তিনি রেডিওতে রায় শুনেছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’
এ সময় তাঁকে উদ্বিগ্ন বা বিচলিত হতে দেখা যায়নি এবং এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়াও জানাননি বলে নিশ্চিত করেন জেল সুপার। তবে রায়ের কপি এখনো হাতে না পাওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে রায় পড়ে শোনানো হয়নি।
সকাল ৯টা ৪ মিনিটে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ট্রাইব্যুনাল-১-এ প্রমাণিত নয়টি অভিযোগের মধ্যে ৭ নম্বর অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ বাতিল করে ওই অভিযোগে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়, বাকি অভিযোগগুলোতে ট্রাইব্যুনালের আদেশই বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর মধ্যে ৩, ৫, ৬ ও ৮ নম্বর অভিযোগে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ২ ও ৪ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর করে ৪০ বছর এবং ১৭ ও ১৮ নম্বর অভিযোগে পাঁচ বছর করে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ বহাল রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ২৩টি অভিযোগ দাখিল করেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
গত ৭ জুলাই আপিলের শুনানি শেষে ২৯ জুলাই রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। এদিন সালাউদ্দিন কাদেরের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে ১৬ জুন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতার আপিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে আসামিপক্ষ ট্রাইব্যুনালের রায়, সাক্ষ্য ও জেরা এবং রায়-সংক্রান্ত নথি আদালতে উপস্থাপন করে। তিনটি কার্যদিবসে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২৯ জুলাই রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধে এটি আপিল বিভাগে আসা পঞ্চম রায়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এই রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর আপিল করেন বিএনপি নেতা।
হরতালের আগের রাতে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। এর পর ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।