একবার একবার করে ক্ষমতায় আসা মানেই গণতন্ত্র নয় : জয়
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি ও যোগাযোগবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘গণতন্ত্রের মানে এই না যে সবাই একবার একবার করে ক্ষমতায় আসবে কিংবা সংসদে সমানসংখ্যক আসন পাবে। গণতান্ত্রিকভাবে জয়ী হতে হলে আপনাকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে এবং জনগণের ভোট পেতে হবে।’
আজ শনিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে সজীব ওয়াজেদ জয় এ কথা বলেন। আজ তাঁর নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী, দিবসটি বাংলাদেশে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
১৯৭৫ সালের শোকাবহ এই কালো দিবসে সূর্য ওঠার আগে খুব ভোরে ধানমণ্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।
পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তাঁর ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্ত, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু, কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।
সজীব ওয়াজেদ জয় সেদিনের সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘হত্যা আর স্বজন হারানোর বেদনা আমার পরিবারের চেয়ে ভালো কেউ জানে না। ওরা শুধু একজনকেই হত্যা করেনি। এমনকি খুনিরা আমার মামিদের, যাদের মধ্যে একজন ছিলেন সন্তানসম্ভবা এবং শিশুদেরও রেহাই দেয়নি। ঠান্ডা মাথায় তারা আমার ১০ বছর বয়সী রাসেল মামাকেও হত্যা করেছিল। এরা ছিল দানব।’
‘এই যখন অবস্থা, সেখানে ওই দিনের পত্রিকার দিকে তাকালে দেখবেন, কিছু লোক খুনিদের প্রশংসা পর্যন্ত করেছিল। নির্বাচনে আমার নানাকে হারাতে না পেরে তাঁকে স্বৈরাচার বলে দাবি করেছিল তখনকার বিরোধীরা। এখন আমাদের সুশীলসমাজের কারো কারো কাছ থেকে বারবার একই কথা শোনা যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে বলেন, ‘গণতন্ত্রের মানে এই না যে সবাই একবার একবার করে ক্ষমতায় আসবে কিংবা সংসদে সমানসংখ্যক আসন পাবে। গণতান্ত্রিকভাবে জয়ী হতে হলে আপনাকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে এবং জনগণের ভোট পেতে হবে। এই বিষয়টা সুশীলসমাজের কেউ কেউ ১৯৭৫ সালে পাত্তা দেননি। এবং এখনো সুশীলসমাজের কেউ কেউ বিষয়টা পাত্তা দিতে চান না।’
‘এই ধরনের চিন্তাভাবনার পরিণতি কী হয় তা ইতিহাস দেখিয়েছে’ উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় আরো বলেন, ‘মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর যেখানে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করেছে, সেখানে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ ধুঁকেছে। তার কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত আমাদের দেশ দ্রুত উন্নতির পথে যেতে পারেনি। মাত্র ছয় বছরে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। ১৫ অগাস্টের হত্যাকাণ্ড না হলে আজ বাংলাদেশ উন্নত অর্থনীতির দেশ হতো।’