জোড়া খুন : গ্রেপ্তার আতঙ্কে মানবশূন্য চিংড়িখালি
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের বৈরাগিরচক চিংড়িখালিতে খাস জমি দখলের সময় হামলায় জোড়া খুনের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় পাঁচশ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে আটজনকে। ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ওই এলাকার লোকজন বাড়ি ছেড়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে আশরাফ মীর ও ইসহাক গাজীকে তাদের পারিবারিক কবরস্থান কাজলা কাশিবাটিতে দাফন করা হয়েছে ।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল্লাহ আজ মঙ্গলবার জানান, হামলায় নিহত আশরাফ মীর ও তাঁর শ্যালক ইসহাক পাড় হত্যার ঘটনায় একটি এবং অস্ত্র আইনে আরো একটি মামলা করা হয়েছে। মামলা দুটির প্রতিটিতে ৬৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো দুই থেকে আড়াইশ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দুটির বাদী হয়েছেন কালিগঞ্জ থানার উপসহকারী পরিদর্শক ( এএসআই) মো. সাগর আলী।
এ মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঁরা হলেন মনিরুল ইসলাম, সেকেন আলী, রেজাউল ইসলাম, আবদুর রশীদ, নুর ইসলাম, আবুবকর, বাবলু এবং নিহত আশরাফের ছেলে হাবিব।
অভিযোগ রয়েছে, গতকাল সোমবার ভোরে আশরাফ মীরের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন সশস্ত্র লোক চিংড়াখালি এলাকায় বাড়িঘরে আকস্মিক হামলা চালায়। এখানে তিন শতাধিক ভূমিহীন পরিবারের সহস্রাধিক সদস্য বসবাস করতেন। এখানকার ৮০০ বিঘা সরকারি খাস জমিতে বসবাস ও মাছ চাষ করছে তারা।
পুলিশ জানায়, আশরাফ মীরের নেতৃত্বে হামলাকারীরা প্রথমে বোমা ফাটায়। পরে তারা গুলিও ছোড়ে। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তিন হামলাকারী আশরাফ মীর, তাঁর শ্যালক ইসহাক গাজী ও সহযোগী আবুবকরকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। কালিগঞ্জ হাসপাতালে আনার পর পর আশরাফ ও ইসহাক মারা যান ।
ঘটনার পর সেখানে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে এলাকা জুড়ে লাগাতার অভিযান শুরু করে পুলিশ। মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, চিংড়িখালির জনপদে কোনো লোকজন নেই। কেবল রোগগ্রস্ত, অতি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাই সেখানে রয়েছেন।
ওসি মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘এ এলাকা এখন ভূমিহীন নয়, পুলিশ জনপদ।’