বাঘা যতীনের চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান
ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের নায়ক যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, যিনি ‘বাঘা যতীন’ নামে ইতিহাসে খ্যাত তাঁর চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। আজ বুধবার দুপুরে বাঘা যতীনের জন্মস্থান কুষ্টিয়ার কয়া মহাবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ও ভারতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ আহ্বান জানান।
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর বাঘা যতীনের শততম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯১৫ সালের এই দিনে এ মহান বিপ্লবীর ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করেন। তাঁর এ মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ‘বাঘা যতীনের মৃত্যু শতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
আজকের অনুষ্ঠানে জাতীয় কমিটির যুগ্ম চেয়ারম্যান ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের সভাপতিত্বে এ বিপ্লবীর জীবন-কর্ম নিয়ে বক্তব্য দেন বাঘা যতীনের পৌত্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ইন্দুজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম মুখোপাধ্যায়, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, মুক্তিযুদ্ধকালীন ৮ নম্বর সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব:) আবু ওসমান চৌধুরী, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম স্বপন প্রমুখ।
ইন্দুজ্যোতি মুখোপাধ্যায় বলেন, বাঘা যতীন জানতেন, তিনি যুদ্ধে মারা যাবেন। তার পরও তিনি সহযোগীদের বলেছিলেন, আমরা মরব, কিন্তু পিছপা হব না। আমরা মারা গেলেও দেশ বাঁচবে। সেই মানুষটিকে অনেক পরে হলেও ভারত এবং বাংলাদেশবাসী চিনতে শুরু করেছে। ভারতে তাঁর নামে অনেক কিছুই আছে। বাংলাদেশেও বিশেষ করে কয়ায় কিছু করার দাবি জানান ইন্দুজ্যোতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, বাঘা যতীন যুদ্ধে বিজয়ী হলে ভারতবর্ষের ইতিহাস তাঁকে নির্ভর করেই লেখা হতো। কয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও এর সামনের সড়কটি বাঘা যতীনের নামে নামকরণের দাবি জানান এ ইতিহাসবিদ।
কয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম স্বপন বলেন, বাঘা যতীনের নামে এখানে অনেক জমি আছে। যেগুলো প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছেন। কয়া মহাবিদ্যালয় ও এর সামনের সড়ক তাঁর নামে নামকরণ ও জমিগুলো উদ্ধার করে বাঘা যতীনের নামে থিয়েটার ও গবেষণাগার নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
পাশাপাশি ১৯৭২ সালে গড়ের মাঠে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কয়ায় মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন। সেটিরও বাস্তবায়ন চান ইউপি চেয়ারম্যান।
১৮৭৯ সালের ৮ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার কয়া গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন বাঘা যতীন। যিনি ভারতবর্ষকে পরাধীনতার শেকল ভেঙে মুক্ত করার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। মাত্র চারজন কিশোরযোদ্ধাকে নিয়ে সাড়ে চার হাজার ব্রিটিশ সৈন্যের বিশাল বাহিনীর সঙ্গে তিনি মরণযুদ্ধে নেমেছিলেন। সেই যুদ্ধেই নিহত হন ব্রিটিশবিরোধী এ যোদ্ধা।