বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে শাল্লায় সহিংসতা মানতে পারছি না
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁওয়ে হামলা ও লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যের হাতে এই সহায়তা তুলে দেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান ও পুলিশের সিলেট রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহমদ। সহায়তার মধ্যে রয়েছে নগদ তিন লাখ ২৫ হাজার টাকা, ৩২ বান্ডিল ঢেউটিন ও সাত টন চাল। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
সহায়তা বিতরণের আগে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় লোকজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শন করেন। এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সান্ত্বনা এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দেন।
এ সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘যেদিন শাল্লায় ওই ঘটনা ঘটে সেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ছিল। আমরা ঘটনাটি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। সুতরাং যারা হামলা চালিয়েছে তাদের পরিচয় কী? আসল শত্রু কারা? তাও আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই ঘটনার পর পর দুটি মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার এজহারাভুক্ত দুজনও গ্রেপ্তার হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন আবারও প্রমাণ করল বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি আমরা বজায় রাখব।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শানে রিসালাত সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের সামনে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সেই সূত্র ধরে পাশের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের ঝুমন দাস আপন তাঁর ফেসবুকে মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন বলে দাবি করা হয়। একপর্যায়ে ঝুমনকে খুঁজে বের করে গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশে দেয় লোকজন। এরপরও লোকজন শান্ত না হয়ে গত বুধবার সকাল থেকে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নোয়াপাড়া গ্রাম ঘিরে রাখে। পরে তারা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রামবাসীর পক্ষের করা মামলার বাদী স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই মামলায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অন্যদিকে, এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে পুলিশের করা মামলায় বাদী হয়েছেন শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম। শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক এ তথ্য জানান।