লকডাউনে জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কারখানা খোলা থাকবে
সারা দেশে সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে আজ শনিবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এদিকে লকডাউন চলাকালে জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও শিল্প-কারখানা খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। আজ শনিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান তিনি।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দ্রুত বেড়ে যাওয়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করার স্বার্থে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সরকার সারা দেশে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। লকডাউন চলাকালে জরুরি সেবা দেয়—এমন প্রতিষ্ঠানগুলো এবং শিল্প-কারখানা খোলা থাকবে। শ্রমিকেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং বিভিন্ন শিফটে কারখানায় কাজ করবেন।’
এদিকে, কয়েকদিন ধরে দেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। প্রতিদিন ভাঙছে আগের দিনের রেকর্ড। দেশে নতুন করে আরও ছয় হাজার ৮৩০ জন জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। গত বছর দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর এটিই একদিনে সর্বাধিক আক্রান্তের সংখ্যা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ছয় হাজার ৪৬৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল, যেটি ছিল সর্বাধিক। এ নিয়ে দেশে মোট ছয় লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া দেশে নতুন করে করোনায় আরও ৫০ জন মারা গেছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে নয় হাজার ১৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
নতুন করে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে দুই হাজার ৪৭৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ৪১১ জন করোনা থেকে সুস্থ হলো।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, শুক্রবার ২২৬টি ল্যাবে ২৯ হাজার ৩৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ ছাড়া নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩০ হাজার ২৯৩টি। নমুনা শনাক্তের হার শতকরা ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৪৭ লাখ ২৮ হাজার ১১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
৫০ জন মৃতের মধ্যে পুরুষ ৪০ জন এবং নারী ১০ জন। দেশে এ পর্যন্ত করোনায় পুরুষ মারা গেছে ছয় হাজার ৮৮৭ জন ও নারী দুই হাজার ২৬৮ জন।
এ ছাড়া মৃতদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন এবং ষাটোর্ধ্ব ৩২ জন রয়েছেন।
মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের সাতজন, রাজশাহী বিভাগের দুজন, খুলনা বিভাগের তিনজন এবং সিলেট বিভাগের দুজন। এ ছাড়া হাসপাতালে মারা গেছেন ৪৯ জন এবং বাড়িতে একজন।
দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ওই বছরের ১৮ জুন তিন হাজার ৮০৩ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে লাখ ছাড়িয়েছিল করোনার রোগী। সেদিন পর্যন্ত মোট শনাক্ত ছিল এক লাখ দুই হাজার ২৯২ জন। এ ছাড়া দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত বছরের ১৮ মার্চ। গত বছরের ৩০ জুন একদিনে সর্বাধিক ৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।