পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাসের প্রলোভন দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম খায়রুল ইসলামের (৭০) কাছ থেকে ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর বনশ্রী ও শাজাহানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন  এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. সাইমুন ইসলাম (২৬) ও মো. আশফাকুজ্জামান খন্দকার (২৬)। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি কম্পিউটার, জাল ভিসা ও জাল টিকিটসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। এ চক্রের মূলহোতা অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী উম্মে ফাতেমা রোজী (৩৫)। তাকেও দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী বসবাসের কথা বলে দীর্ঘদিন ধরে জাল ভিসা প্রস্তুত করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রবাসী উম্মে ফাতেমা রোজী। তিনি মাঝেমধ্যে দেশে এসে উচ্চবিত্তদের টার্গেট করে আত্মীয়ের ভিসায় অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যাবেন বলে প্রলোভন দেখান। সপরিবারে গেলে (স্বামী-স্ত্রী) ২৩ লাখ আর একা গেলে ১৮ লাখ, সে হিসেবে চুক্তি করতেন তিনি। রোজী নিজেকে অস্ট্রেলিয়া ইমিগ্রেশন কনস্যুলার জেনারেল হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিতেন।’

অতিরিক্ত ডিআইজি আরও বলেন, ‘রোজী দেশে থাকাকালে তার সঙ্গে পরিচয় হয় আইনজীবী এ বি এম খায়রুল ইসলামের। তখন রোজী অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের কাছ থেকে পুরস্কৃত হন ও পুরস্কারের ছবি আইনজীবীকে দেখান। এতে করে ভুক্তভোগী বিশ্বাস করতে থাকেন। এরপর অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশনমন্ত্রী এলেক্স হাউকির সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে বলেও জানান রোজী। এরপর ধাপে ধাপে কাগজপত্র ও ভিসার কথা বলে টাকা নিতে থাকেন। ওই আইনজীবীও রোজীর ফাঁদে পড়ে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের আট সদস্য অস্ট্রেলিয়ায় যেতে চেয়েছিলেন। এজন্য রোজীর দেওয়া দুইটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা দেন আইনজীবী। টাকা দেওয়ার পর কাগজপত্র ও ভিসা হাতে পেয়ে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখতে পান সবগুলোই ভুয়া এবং জাল।’

ইমাম হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী আইনজীবী প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে গত ১ জুলাই রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি মামলা করেন।