নওগাঁয় প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়েও বিতাড়িত প্রতিবন্ধী লোকমান
নওগাঁয় এক প্রতিবন্ধীকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর তার ছোট ভাই কৌশলে কেড়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত বছর সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মোক্তারপাড়ায় ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বানিয়ে দেওয়া হয় প্রতিবন্ধী লোকমান আলীকে। সেই ঘরে ছয় মাস বসবাসও করেন তিনি। পরে তার ভাই হাকিমুদ্দিন ও তার চার ছেলে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবন্ধী লোকমান আলীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। যদি কাউকে ঘরের কথা বলেন তাহলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন তারা।
তাই লোকমান আলীর এখন আবার ভাঙাচোরা ঘরেই বসবাস। একটু বৃষ্টি হলেই সেই ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে। তাই ঘরে থাকা যায় না। প্রতিবন্ধী লোকমান আলীর একটি মেয়ে আছে। তিনিও তার স্বামীকে নিয়ে লোকমান আলীর ভাঙাচোরা ঘরেই থাকেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে যেতে চাইলেও যেতে পারেন না। কারণ হাকিম উদ্দিনের ছেলে বিটু ইউপি চেয়ারম্যানের খুব কাছের লোক। পুরো ইউনিয়নে তার প্রভাব। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে ভয় পায়। কারণ চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকায় তিনি প্রকাশ্য দিবালোকে হুমকি দেন প্রাণে মেরে ফেলার। এজন্য প্রতিবন্ধী লোকমান আলীর পরিবার হাকিমুদ্দিন যা বলে, তা শুনতে বাধ্য।
এই বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোরশেদুল আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি প্রতিবন্ধীকে দেওয়া হয়েছে। তার বাড়িতে সেই প্রতিবন্ধী থাকে, না কি অন্য কেউ থাকে-সেটা দেখার বিষয় নয়। সে নতুন বাড়ি পেয়ে সেই বাড়ি ভাইকে দিয়েছে। এখন তার বাড়িতে কে থাকবে না থাকবে, সেটা সাংবাদিকদের দেখার বিষয় নয়। সাংবাদিকরা এসেছে টাকা খাওয়ার জন্য। এ বিষয়ে মিথ্যা নিউজ করার জন্য। এ নিয়ে কোনো নিউজ হলে খবর আছে।’
নওগাঁ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুর্যোগ সহনীয় একটি বাড়ি প্রতিবন্ধী লোকমান হোসেনকে দেওয়া হয়েছে। এ বাড়ি নির্মাণের পর থেকেই তার ভাই হাকিমুদ্দিন ঝামেলা করে আসছেন। তার ভাইয়ের কাছ থেকে ওই জমি দানপত্র দলিল করে নিয়ে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছিল। ঘর নির্মাণের পর একটা অভিযোগ আসছে-প্রতিবন্ধী লোকমান আলীকে ওই বাড়িতে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না।
পিআইও আরও বলেন, ‘বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন জানার পর সরেজমিন গিয়ে ওই প্রতিবন্ধীকে তার বাড়িতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবন্ধীকে আবার বাড়ি থেকে সরিয়ে দিয়ে যদি তার ভাই নতুন করে বাড়ি দখল করে থাকে, এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’